সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া

ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ সেরা করদাতা

সাংবাদিকতায় নঈম নিজাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বৃহত্ শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড— ইডব্লিউএমজিএল আবারও শীর্ষ করদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এই গ্রুপ প্রকাশিত দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজামকে সাংবাদিক শ্রেণিতে সেরা পাঁচ করদাতার একজন নির্বাচিত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড—এনবিআর। এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

দেশবরেণ্য সাংবাদিক নঈম নিজাম জনপ্রিয় সংবাদ ভিত্তিক বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টিফোর এবং রেডিও ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা—সিইও। ‘প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া’ ক্যাটাগরিতে ইডব্লিউএমজিএল পর পর গত দুই বছরের ধারাবাহিকতায় এবার তৃতীয় বারের মতো সেরা করদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। ইডব্লিউএমজিএলের মালিকানাধীনথাকা ছয়টি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান হলো— বাংলাদেশ প্রতিদিন, দৈনিক কালের কণ্ঠ, ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি সান, অনলাইন পত্রিকা বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশন এবং রেডিও ক্যাপিটাল ৯৪.৮। এই প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্ণধার বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তার পরিবারকে গত বছর কর বাহাদুর পরিবার হিসেবে ঘোষণা করে এনবিআর। এবার কাউকে কর বাহাদুর পরিবার ঘোষণা করা হয়নি। বসুন্ধরা গ্রুপ সবসময় সেরা করদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এনবিআরে প্রশংসিত।

সরকারের রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান এনবিআরের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী— কোম্পানি পর্যায়ের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরির সেরা চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে আছে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড— ইডব্লিউএমজিএল। এর নিচের অবস্থানে আছে— ট্রান্সক্রাফট লিমিটেড, মিডিয়া ওয়ার্ল্ড লিমিটেড এবং মিডিয়া স্টার লিমিটেড।

ওই প্রজ্ঞাপনে সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে এক নম্বর রয়েছেন চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদীর সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মালেক। এরপরেই আছেন— ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক (বার্তা) শাইখ সিরাজ, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম।

জাতীয় ট্যাক্সকার্ড নীতিমালা—২০১০ (সংশোধিত) অনুযায়ী— ব্যক্তি, কোম্পানি ও অন্যান্য এই তিন ক্যাটাগরিতে মোট ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ড প্রদানের লক্ষ্যে যোগ্য করদাতা ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। এই বিভাগের অধীনেই রয়েছে এনবিআর। প্রতিষ্ঠানটির আরেক প্রজ্ঞাপনে জেলা ভিত্তিক সর্বোচ্চ ও দীর্ঘসময় আয়কর প্রদানকারী করদাতাদের পুরস্কার প্রদান নীতিমালা—২০০৮ অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ কর বছরে ৩৭০ জন সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী এবং ১৪৫ জন দীর্ঘসময় আয়কর প্রদানকারীসহ মোট ৫১৫ জন করদাতার নাম প্রকাশ করা হয়েছে।

আগামী ১২ নভেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে যোগ্য করদাতা হিসেবে নির্বাচিত সবাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্যাক্সকার্ড প্রদান ও সম্মাননা দেবে সরকার। বিগত তিন বছর ধরে পৃথক শ্রেণি-বিন্যাস করে সেরা করদাতাদের ট্যাক্সকার্ড প্রদান করছে এনবিআর। নীতিমালা অনুযায়ী— ট্যাক্সকার্ডধারীদের সরকার বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এবং সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানাবে। যে কোনো ভ্রমণে সড়ক, বিমান বা জলপথে টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন। স্ত্রী-স্বামী, নির্ভরশীল পুত্র-কন্যা নিজেদের চিকিত্সার জন্য সরকারি হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কেবিন সুুবিধা পাবেন। এ ছাড়া বিমানবন্দরে সিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার এবং তারকা হোটেলসহ সব আবাসিক হোটেলে বুকিং পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন। ট্যাক্সকার্ড দেওয়ার পর থেকে এর মেয়াদ থাকবে এক বছর।

সরকারের ওই প্রজ্ঞাপনে ‘সিনিয়র সিটিজেন’ ক্যাটাগরিতে ট্যাক্সকার্ড পাচ্ছেন— সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা তপন চৌধুরী, স্যামুয়েল এস চৌধুরী, অনিতা চৌধুরীসহ আরও দুজন।

‘গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা’ ক্যাটাগরিতে লে. জেনারেল আবু সালেহ মো. নাসিম (অব.), মো. নাসির উদ্দিন মৃধা, এস এম আবদুল ওয়াহাব, মো. ইদ্রিস আলী মিয়া এবং মো. আতাউর রউফ।

‘নারী’ ক্যাটাগরিতে রুবাইয়াত ফারজানা হোসেন, মাহমুদা আলী শিকদার, পারভীন হাসান, রত্না পাত্র ও নিশাত ফারজানা চৌধুরী।

‘তরুণ (৪০ বছরের নিচে)’ ক্যাটাগরিতে নাফিস সিকদার, মো. হাসান, জুলফিকার হোসেন মাসুদ রানা, মো. আমজাদ খানসহ আরও একজন।

‘প্রতিবন্ধী’ ক্যাটাগরিতে সুকর্ণ ঘোষ, মো. মামুনুর রশিদ ও খুলনার কাজী আখতার হোসেন।

‘ব্যবসায়ী’ ক্যাটাগরিতে মো. কাউছ মিয়া, আবদুল কাদির মোল্লা, কামরুল আশরাফ খান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং মো. নুরুজ্জামান খান। ‘বেতনভোগী’ ক্যাটাগরিতে লায়লা হোসেন, মোহাম্মদ ইউসুফ, হোসনে আরা হোসেন, খাজা তাজমহল এবং এম এ হায়দার হোসেন।

‘চিকিত্সক’ ক্যাটাগরিতে সেরা করদাতা হলেন— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, এ কে এম ফজলুল হক, জাহাঙ্গীর কবির, এন এ এম মোমেনুজ্জামান ও মো. নুরুল ইসলাম।

‘আইনজীবী’ ক্যাটাগরিতে ট্যাক্সকার্ড পাচ্ছেন— শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহসানুল করিম, কাজী মুহাম্মদ তানজীবুল আলম ও মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির।

‘খেলোয়াড়’ ক্যাটাগরিতে ট্যাক্সকার্ড পাচ্ছেন তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মুর্তজা।

‘অভিনেতা/অভিনেত্রী’ ক্যাটাগরিতে জনপ্রিয় অভিনেতা এস এ আবুল হায়াত, মাহফুজ আহমেদ এবং এম এ জলিল অনন্ত।

‘শিল্পী’ ক্যাটাগরিতে দেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী রুনা লায়লা, তাহসান রহমান খান ও এস ডি রুবেল।

‘স্থপতি’ ক্যাটাগরিতে ট্যাক্সকার্ড পাচ্ছেন ফয়েজ উল্লাহ, ইকবাল হাবিব ও হাসান সামস উদ্দীন।

‘প্রকৌশলী’ ক্যাটাগরিতে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মো. হাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ হামিদুল হক।

‘হিসাবরক্ষক’ ক্যাটাগরিতে কার্ড পাচ্ছেন— মো. মোক্তার হোসেন, এম বি এম লুত্ফুল হাদী ও বিমলেন্দু চক্রবর্ত্তী।

‘নতুন করদাতা’ ক্যাটাগরিতে সাতজনের মধ্যে রয়েছেন— ঢাকার মিয়া মনিকা রফিকুলোভনা, তাফিজুল ইসলাম পিয়াল ও সাইফুল ইসলাম, সিলেটের রানা মালিক, মোসাম্মাত্ সেলিনা আক্তার ও রাসেল রায় এবং রাজশাহীর মোছা. ছিয়াতুন নেছা। ‘অন্যান্য’ ক্যাটাগরিতে সেরা করদাতা হলেন— সদর উদ্দিন খান, আবু মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম মজুমদার।

‘তৈরি পোশাক’ ক্যাটাগরিতে করদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ট্যাক্স কার্ড পাচ্ছে— রিফাত গার্মেন্টস, জিএমএস কম্পোজিট, দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার, ফোর এইচ ফ্যাশন, কেডিএস গার্মেন্টস ও অ্যাপেক্স লেনজারি।

‘ব্যাংকিং’ ক্যাটাগরিতে ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, এইচএসবিসি, সাউথইস্ট ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক।

‘অব্যাংকিং আর্থিক’ ক্যাটাগরিতে আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড এবং উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।

‘খাদ্য ও আনুষঙ্গিক’ ক্যাটাগরিতে প্রতিষ্ঠান হলো— নেসলে বাংলাদেশ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও ট্রান্সকম বেভারেজেস।

‘প্রকৌশল’ ক্যাটাগরিতে বিএসআরএম স্টিলস, পিএইচপি কোল্ড রোলিং মিলস এবং পিএইচপি নফ কন্টিনিউয়াস গ্যালভানাইজিং মিলস কার্ড পাচ্ছে।

এ ছাড়া টেলিযোগাযোগে গ্রামীণফোন; জ্বালানিতে তিতাস গ্যাস, সিলেট গ্যাস ও শেভরন বাংলাদেশ; পাটশিল্পে জনতা জুট, সুপার জুট ও আইয়ান জুট; আবাসনে স্পেসজিরো, বে ডেভেলপমেন্টস ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স; চামড়াশিল্পে বাটা শু, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ও লালমাই ফুটওয়্যার; অন্যান্য শ্রেণিতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, মেটলাইফ, লাফার্জহোলসিম ও নিটল মোটরস; অন্যান্য করদাতার ফার্ম পর্যায়ে ওয়ালটন মাইক্রোটেক করপোরেশন, এস এন করপোরেশন, ওয়ালটন প্লাজা ও এ এস বি এস কার্ড পাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর