সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আলোচনার দরজা খোলা : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। বিএনপি নেতারা চাইলে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতেই পারেন। সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে গতকাল সচিবালয়ে সড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে  তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মামলার সঙ্গে নির্বাচনকে যুক্ত করার কোনো যুক্তি নেই। মামলা আমরা করিনি। আমরা যেখানে দণ্ড দিইনি, সেখানে মুক্তি দিতেও পারি না। আদালতে তারা চেষ্টা করুন। যদি কোনো অপশন ওপেন থাকে তাহলে আদালতে লিগ্যাল ব্যাটেলে যেতে পারেন। তার ৩০টির মতো মামলার জামিন হয়ে গেছে, সরকার কি বাধা দিয়েছে? এ মামলায় যে রায় হয়েছে, জামিন পাবেন কিনা তা উচ্চ আদালত বলতে পারবে।’ খালেদা জিয়ার চিকিত্সার জন্য প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সেটা তারা এসে প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারেন। সে রকম কিছু যদি তারা চান, আলোচনা তো খোলামেলা হতেই পারে বেগম জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে।’ তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়াকে মুক্তি বা চিকিত্সা দেওয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে স্ট্যান্টবাজি করা হয়েছে। এখন তো চিকিত্সা নিয়ে কোনো কথা নেই। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতিটা বেশি করা হয়েছে।’

দুটি দুর্নীতির মামলায় ১০ ও ৭ বছরের সাজা নিয়ে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে জানিয়ে আসছেন দলটির নেতারা। ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় দফা সংলাপের চিঠির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাকে একটু আগে গণফোরামের সেক্রেটারি জানিয়েছেন। আমি অফিসে বলে দিয়েছি চিঠি দিয়ে যাবে। বিকালে লিডারের সঙ্গে আলোচনা করব। সংলাপে বেশি সময় নিতে চাইছি না। এরপর ইলেকশন রিলেটেড অ্যাকটিভিটি আছে। ছোট পরিসরে আলোচনা করা যায়। সেদিনও একই কথা হয়েছে...। আলোচনার দুয়ার তো বন্ধ হবে না। আমরা বলেছি অব্যাহত থাকবে।’ আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, দেখাদেখি-চোখাচোখিও ছিল না, সেটা তো হলো। খোলামেলা পরিবেশে তারা কথা বলেছেন। যে যা বলতে চেয়েছেন স্বাধীনভাবে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। আবার বসতে চাইলে আয়োজন করার চেষ্টা করা হবে, নেত্রীর সঙ্গে আলাপ করে। আমরা ৭ তারিখের পর যেতে চাইছি না। রাজনৈতিক দল দুইশ’র কাছাকাছি। আজ ১৪ দল, কাল জাতীয় পার্টির সঙ্গে, দিনে ও রাতে মিলে দুটি সেশন করতে চাই। এরপর ইলেকশন বিষয়ক কাজে জড়াতে হবে।’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। এটি একটি ইতিহাস। দেশের ইতিহাসে সরকারপ্রধান এভাবে এ পর্যায়ে সংলাপ করেননি। এটি শীর্ষ পর্যায়ে সামিট বৈঠকের মতো। কিছু দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। যেমন কিছু বিষয় আছে—লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, যেখানে সভা-সমাবেশ করতে চাইলে বাধা আসবে বলে মনে করি না। সরকারের কোনো সুবিধা নির্বাচনকালীন সময়ে নেব না। একটা সংলাপে কি জমাটবাঁধা বরফ গলে যাবে? এ পর্যন্ত যা হয়েছে তা পজিটিভ। সংলাপে পজিটিভ অগ্রগতি আছে।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংলাপ আর আন্দোলন একসঙ্গে চলে না। আমার প্রশ্ন, সংলাপ যখন তারা চান, আবারও বসতে চান, তাহলে আন্দোলন কেন?’ নির্বাচনের তফসিল পেছানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ইলেকশন কমিশনকে কিছু বলব না। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করবে।’ হেফাজতের শোকরানা মাহফিলের কারণে জেএসসি পরীক্ষা পেছানোয় সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার্থীরা একটু চাপে আছে। দেশের রাজনৈতিক অবস্থা এখন ইলেকশন সামনে রেখে। আমরা সবাই চাপের মুখে। ওরা একটু ত্যাগ স্বীকার করবে। আমি তাদের কাছে অনুরোধ করছি যে, একেবারে অনিচ্ছাকৃত পরিস্থিতির কারণে। আমরা বলব তারা বিষয়টি সুনজরে দেখবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর