বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রির আগে বর-কনের রক্ত পরীক্ষা এবং যে কোনো চাকরিতে প্রবেশের আগে ডোপ টেস্ট করা কেন বাধ্যতামূলক করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। গতকাল এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া। তার সঙ্গে ছিলেন সৈয়দা শাহিন আরা লাইলী। আদেশের পর রিটকারী একলাছ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের সব চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে ডোপ টেস্ট এবং বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রির আগে বর-কনের শরীরে মাদক ও থ্যালাসেমিয়ার অস্তিত্ব সম্পর্কে মেডিকেল সার্টিফিকেট দাখিল কেন বাধ্যতামূলক করা হবে না, হাই কোর্টের জারি করা রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং পুলিশের আইজিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিয়ের আগে বর ও কনের রক্তে থ্যালাসেমিয়া ও মাদকের অস্তিত্ব আছে কি না, তা পরীক্ষা করে মেডিকেল সার্টিফিকেট দাখিল বাধ্যতামূলক চেয়ে ৫ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা শাহিন আরা লাইলীর পক্ষে অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে এ রুল জারি করা হলো। রিট আবেদনে বলা হয়েছিল, থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে একই রোগে আক্রান্ত কোনো রোগীর বিয়ে হলে অনাগত সন্তান বিকলাঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। এ ছাড়া দেশে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত। এর মধ্যে শতকরা ৬৫ ভাগই তরুণ। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বিবাহবিচ্ছেদের অন্যতম কারণ মাদকাসক্তি। রিটে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সিটি করপোরেশনের সালিশি পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, নারীদের অভিযোগের কারণ হচ্ছে স্বামীর শারীরিক অক্ষমতা। বিভিন্ন ধরনের মাদক, যেমন ইয়াবা, হেরোইন, অ্যালকোহল ইত্যাদি সেবনে পুরুষরা পুরুষত্বহীন হয়ে যাচ্ছে। নিকাহনামার ৩ ও ৪ নম্বর দফায় বর-কনের জন্ম সনদের পাশাপাশি ১৭ নম্বর দফায় ডাক্তারি সার্টিফিকেট (ডোপ টেস্ট সার্টিফিকেট) বাধ্যতামূলক হলে বর-কনের ভবিষ্যৎ সংসার ও অনাগত সন্তানের জীবন রক্ষা পাবে বলে রিটে উল্লেখ করা হয়।
