বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সংলাপের পর সংবাদ সম্মেলন

বল এখন সরকারের কোর্টে : ড. কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বল এখন সরকারের কোর্টে। দায়িত্ব সরকারের। ঐক্যফ্রন্ট সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সামনে সীমিত পরিসরে আরও আলোচনার দাবি আমরা জানিয়েছি। তিনি বলেন, সংলাপে আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন— আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা দায়ের হবে না। নতুন করে আর কাউকে গ্রেফতারও করা হবে না। গতকাল দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারি দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষে বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে নিজের বাসায় জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। ‘রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে?’ এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা তো চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং চেষ্টা করে যাব যে, একটা স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে সব কিছু হোক। দায়িত্ব তো সরকারের, বল সরকারের কোর্টে।  এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুরসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতারা উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনকালীন সরকার, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ সাত দফা দাবি নিয়ে আরও আলোচনা চায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপে এমন প্রস্তাব দেন বলে জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংলাপ পুরোপুরি ফলপ্রসূ হয়নি। আলোচনা ও আন্দোলন একসঙ্গেই চলবে। তারা (ক্ষমতাসীন পক্ষ) একগুঁয়েমি ছাড়েনি। তবে আরও আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

‘সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হতে পারে। তবে আনুষ্ঠানিক সংলাপ আর হবে না।’ এমন বক্তব্য সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের কাছে আমরা আরও আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছি। আলোচনা অব্যাহত থাকবে। সে আলোচনা ফলপ্রসূ কিনা, তা জনগণই ঠিক করবে। আমরা আমাদের কর্মসূচিও অব্যাহত রাখব। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আন্দোলনে আছি। কাল (আজ বৃহস্পতিবার) রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ হবে, পরদিন হবে সমাবেশ। সংলাপ আমাদের আন্দোলনেরই অংশ। যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত। সরকার যদি তা না চায়, তার সব দায়ভার তাদের। আমরা আমাদের দাবিগুলো নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। আইনিভাবে তা হতে পারে। ‘সরকারকে দেওয়া নির্বাচনকালীন ১০ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের প্রস্তাব’ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান চেয়েছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আলোচনায় কোনো সমাধান না পেলে পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য সব দায়দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তায়। আমরা সংলাপটাকেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছি। সে কারণে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, এখনো ভালো ফলের প্রত্যাশা করছি। শেষ পর্যন্ত তা না পাওয়া গেলে সব দায় সরকারের।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপে কোনো সমাধান হয়নি। (আজ বৃহস্পতিবার) তফসিল ঘোষণার তারিখ পেছানোর কথা বলেছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সংবিধানসম্মতভাবে আমরা তফসিল ঘোষণার তারিখ পেছানোর কথা বলেছি। ‘তারপরও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে আপনারা কী করবেন?’ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচি চলবে এবং আমরা তখন পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি জানাব। মান্না আরও বলেন, তফসিল ঘোষণা হলেও আলোচনা চলতে পারে। আর ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন পেছানোর কোনো প্রস্তাব দেয়নি। আমরা সংসদের মেয়াদ শেষের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের এ প্রস্তাব সংবিধানসম্মত। তিনি বলেন, তফসিলের আগে আমরা সংবিধানের আলোকেই সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব করেছি।  এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, কর্মসূচি ঘোষণা করা আছে। কাল (৮ নভেম্বর) রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ হবে। তফসিল ঘোষণা হলে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে আমরা পদযাত্রা করব। তবে প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন, প্রয়োজনে তফসিল ঘোষণার পরও পুনঃতফসিল হতে পারে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা এখন জনগণের কাছে যাচ্ছি, তাদের নিয়েই দাবি আদায় করব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর