শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সংলাপের পর সংবাদ সম্মেলন

ফাঁকফোকরে অপশক্তিকে সুযোগ দেবেন না : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের নির্বাচন পিছিয়ে দিতে গিয়ে কোনো অপশক্তিকে ফাঁকফোকর দিয়ে অনুপ্রবেশের সুযোগ না দেওয়ার কথা বলেছেন। যা আমাদের সবার জন্য সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। গতকাল গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সাত দফার বেশির ভাগই মেনে নিতে প্রধানমন্ত্রী সম্মত হয়েছেন। কিন্তু তারা এমন কিছু বিষয় নিয়ে এসেছেন যা পরবর্তী ৯০ দিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এসব নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার একটা বাহানা। এর মধ্যে ফাঁকফোকর রয়েছে। যেখান দিয়ে তৃতীয় অপশক্তি এসে ১/১১-এর মতো ঘটনা ঘটাতে পারে। আমরা সেটাই মনে করছি। তারপরও বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকারের অবস্থান ও সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিবেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১০ সদস্যের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পরবর্তী ৯০ দিনের প্রক্রিয়ার অংশ। আমরাতো সংবিধানের বাইরে যাব না। এটা আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি। তিনি বলেন, সংলাপ ব্যর্থ বলে আমি মনে করি না। আলোচনা হয়েছে সৌহার্দ্য পরিবেশে, আলোচনায় কোনো ধরনের আনপ্লেজেন্ট কিছু ঘটেনি। এটা একটা ইতিবাচক অগ্রগতি। নির্বাচনের প্রক্রিয়াও এগিয়ে যাবে, এর মধ্যে আলোচনাও চলবে। তবে সংলাপ শেষ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের অনুরোধ করে বলেন, আপনারা নির্বাচনে আসেন। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করে দেখিয়ে দিব আমি যা বলেছি সেটাই সঠিক। আমি আমার দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণামূলক অভিসন্ধি নিয়ে কাজ করি না। জনগণ যদি ভোট দেয়, আমরা থাকব। আপনাদের দিলে আপনারা জিতবেন। নির্বাচনে কোনো প্রকার কারচুপি, জালিয়াতি হবে না। একটা অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা নির্বাচনে আসবেন এ ব্যাপারে আশাবাদী। আমাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। এমনকি বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন, আপনারা আসুন, আমি একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশে দিব। এ ব্যাপারে সহযোগিতা করুন। নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে গিয়ে কোনো অপশক্তিকে ফাঁকফোকর দিয়ে অনুপ্রবেশের সুযোগ দিবেন না। যেটা আমাদের সবার জন্য সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা বলছেন প্রস্তাব সংবিধানের মধ্যে। কিন্তু বিষয়টা সংবিধানের বাইরে। এখানে বিরাট ফারাক রয়েছে। তারপরও যাওয়ার সময় তাদের অনেকটা নমনীয় বলে মনে হয়েছে আমার কাছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা মন খুলে আলোচনা করেছেন। আমরাও করেছি। আজকে তারা যে দাবিগুলো নিয়ে এসেছেন, তার মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে কিছু বিষয়ে নিশ্চয়তা ও ঐকমত্য চান। সংবিধানের বিধান হচ্ছে ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা, কিন্তু তারা চাচ্ছেন সংসদ ভেঙে ২৮ জানুয়ারির পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে। কাদের বলেন, নির্বাচনে সব দলের সহবস্থান, বিদেশি পর্যবেক্ষকও রাজবন্দীদের মুক্তির দাবি মেনে নিতে কোনো আপত্তি নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তফসিল ঘোষণার পরে নির্বাচন কমিশনই এগুলো করবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বিষয়ে আমরা সম্মত, নির্বাচনী এলাকায় মন্ত্রীরা জাতীয় পতাকা ব্যবহার করবে না। মন্ত্রী ও এমপিরা সরকারি কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিবেন না। রাজবন্দীদের তালিকা প্রধানমন্ত্রী আইনমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন। যদি তারা রাজবন্দী হয়, তাহলে তাদের মুক্তির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে।  তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট যদি তাদের প্রার্থিতা দেয় তারা এবং অন্যপ্রার্থীরা যে সুযোগ-সুবিধা পাবেন আওয়ামী লীগ বা মহাজোটের মনোনীত প্রার্থীরাও একই সুবিধা পাবেন।

সেনাবাহিনীর ম্যাজিট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার নিয়ম পৃথিবীর অন্যান্য দেশে নেই। তবে সেনা মোতায়েন হতে পারে। তারা যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানে স্থানীয় প্রশাসনকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সহযোগিতা করবে। বিএনপির কর্মসূচি বিষয়ে কাদের বলেন, তারা পদযাত্রা করবে, রোডমার্চ করবে এটাতো তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এগুলোকে আমরা অগণতান্ত্রিক ভাবি না। কিন্তু পদযাত্রা ও রোডমার্চে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করলে আমরা চুপ থাকব না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর