আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) কমান্ডার ইন চিফ পরেশ বড়ুয়া সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। ভারতের গোয়েন্দা সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। তবে উলফার পক্ষ থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। সূত্র : আনন্দবাজার। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, মিয়ানমার-চীন সীমান্তে ১০-১২ দিন আগে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। তাতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন পরেশ বড়ুয়া। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কিছু দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান তিনি। উলফার একাংশের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, দলের শীর্ষ নেতার সঙ্গে গত শনিবার পর্যন্ত তাদের কয়েকজনের যোগাযোগ হয়েছে। সে সময় তিনি অসুস্থ ছিলেন। তবে তখন পর্যন্ত মারা যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। আসাম পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুর খবর শুনেছেন। ভারতীয় সেনা গোয়েন্দা সূত্রেও জানানো হয়েছে, এ খবর তাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। যদিও ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ওই উলফা নেতার পরিবারের কাছে এ ধরনের কোনো খবর আসেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। উলফা সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি পরেশ বড়ুয়া বাইক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। ওই দুর্ঘটনায় তার কোমর ও পায়ে চোট লাগে। তিনি জখমও হন। দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমার-চীন সীমান্তের রুইলি এলাকায় থাকতেন পরেশ বড়ুয়া। সম্প্রতি তার ক্যাম্প থেকে এসে আত্মসমর্পণ করা একজনের কাছ থেকে জানা গেছে, ডায়াবেটিসের জন্য পরেশের শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। দিন দিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। এদিকে দলটির আরেক নেতা অনুপ চেটিয়া জানিয়েছেন, ‘পরেশ বড়ুয়া মারা গেছেন, আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। এক মাস আগেই আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পায়ে আঘাত লেগেছিল এবং তিনি এখন সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছিলেন আমাকে।’ প্রসঙ্গত, এর আগেও বেশ কয়েকবার পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সেসব খবর ভুল প্রমাণিত হয়। প্রতিবারই উলফার তরফ থেকে দাবি করা হয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভুল খবর রটানো হয়েছে। তবে এবার কোনো দাবি করা হয়নি। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উদ্ধার হওয়া ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় এ উলফা নেতার মৃত্যুদণ্ডের রায় আছে। ওই বছর ১ এপ্রিল রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কর্ণফুলী নদীর তীরে রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সংরক্ষিত জেটিঘাটে দুটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র খালাস করে ট্রাকে তোলার সময় পুলিশ সেসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ আটক করে। চীনে তৈরি এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সমুদ্রপথে উলফার জন্য আনা হয়েছিল বলে পরে তদন্তে উঠে আসে; অস্ত্রের এ চালান বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
