শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

অগ্নিসন্ত্রাস রুখে দাঁড়ান : প্রধানমন্ত্রী

সংসদীয় বোর্ডের সভা, জোট শরিকদের জন্য ৬৫-৭০ আসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আবার ‘আগুন সন্ত্রাস’ শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যে কোনো সন্ত্রাস, অগ্নি-সংযোগের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। গতকাল ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সংসদীয় বোর্ডের সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির প্রতি অনুরোধ, তারা যেন নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র না করে। আর ষড়যন্ত্র করেও লাভ হবে না। তারা পার পাবে না। কারণ জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। তারাই সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।’ তিনি বলেন, এই চেষ্টা তারা ২০১৪-তে করেছে, সফল হতে পারেনি। আগামীতেও পারবে না। জনগণ চায়, একটা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হোক। যে নির্বাচনে তারা ভোট দিয়ে তাদের মনমতো সরকার গঠন করবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে সব দল আসার ঘোষণায় দেশে যখন একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তখনই নয়াপল্টনের ওই ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় সরকারকে দায়ী করে বিএনপি যে অভিযোগ করেছে, তা নাকচ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের কাজ করার পর উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে দেওয়া, মানে একজনের দোষ আরেকজনের ওপর দেওয়া। এই কাজে তারা পারদর্শী। তিনি বলেন ‘যেখানে ভিডিও ফুটেজসহ দেখাচ্ছে, সেখানে চট করে বলে ফেলল (অগ্নিসংযোগকারীরা) আমাদের ছাত্রলীগের। ছাত্রলীগ, যুবলীগ বিএনপির অফিসের সামনে যাবে কেন? আর চেহারা তো দেখাই যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তাদের নিয়ে তারা দল করে। তাদের (বিএনপি) দলের গঠণতন্ত্রের সাত অনুচ্ছেদও এখন তারা অস্বীকার করে। যে কোনো সাজাপ্রাপ্ত, খুনি, ডাকাত, দুর্নীতিবাজ সবাই তাদের নেতা হতে পারে। আর এদের সঙ্গে যারা এখন যুক্ত হয়েছে, তারা বড় বড় কথা বলে। এখন দেখা যাচ্ছে তারা এই দলের সঙ্গেই যুক্ত। বিএনপির নেতৃত্বের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের এগিয়ে যাওয়াটা তারা নস্যাৎ করতে চায়। সাধারণ মানুষ যখন সুখে থাকে, বিএনপির মনে তখন দুঃখ দেখা দেয়। নইলে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করতে পারে না। এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেই কারাগারে তাদের নেত্রী। আরেক জন তো গ্রেনেড হামলা, মানি লন্ডারিং নানা অপকর্ম, তার জন্য সাজাপ্রাপ্ত।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গত ১০ বছরে যে উন্নয়ন করেছে তাতে আগামী নির্বাচনেও জনগণ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ব।’ শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদীয় বোর্ডের সভা শুরু হয় বিকাল সাড়ে ৩টায়। বোর্ডের সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ওবায়দুল কাদের, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, অধ্যাপক ড. আলাউদ্দীন আহমেদ, রশিদুল আলম, ড. আবদুর রাজ্জাক ও ফারুক খান উপস্থিত ছিলেন।

জোট শরিকদের ৬৫ থেকে ৭০টি আসন দেওয়া হবে : সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জোটের শরিককে আনুমানিক ৬৫-৭০ আসন দেওয়া হবে। ধানমন্ডির নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, এর সংখ্যা কমতেও পারে, আবার বাড়তেও পারে। এটা নির্ভর করবে উইনেবল ক্যান্ডিডেটের ওপর। যুক্তফ্রন্ট কোনো প্রার্থী তালিকা পাঠায়নি বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি যদি বড় ধরনের অ্যালায়েন্সের সমীকরণে যায়, আমরাও করব। ওবায়দুল কাদের বলেন, ইশতেহার প্রায় চূড়ান্ত। সম্ভবপর সময়ের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, বৈঠকে দেশি-বিদেশি ৫-৬টি সার্ভে জনমত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এখনো আমরা আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন পর্ব শুরু করিনি। দু-এক দিন পরেই আনুষ্ঠানিক পর্ব শুরু করব। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এ কে এম এনামুল হক শামীম প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর