শনিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
উৎসবের আমেজ দুই জোটে

বিএনপির মনোনয়ন বিক্রি সাড়ে ৪ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির মনোনয়ন বিক্রি সাড়ে ৪ হাজার

উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও জমাদান কার্যক্রম শেষ করল বিএনপি। আগামীকাল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শুরু হবে। ১২ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া গতকাল পর্যন্ত ৫ দিনে মনোনয়নয়ন ফরম বিক্রি হয় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। আর মনোনয়ন ফরম জমা পড়ে প্রায় ৪ হাজার। ফরম সংগ্রহ করতে প্রার্থীদের খরচ হয় ৫ হাজার টাকা। ফরম জমা  দেওয়ার সঙ্গে প্রার্থীকে দিতে হয় ২৫ হাজার টাকা। তাতে মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমাদানে বিএনপির আয় হয় প্রায় ১২ কোটি টাকা। তবে গত গভীর রাত পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের ব্যবস্থা রাখে বিএনপি। দলের দফতর শাখা থেকে এটা প্রাথমিক হিসাব। আজ চূড়ান্ত হিসাব তুলে ধরবে বিএনপি। গতকাল শেষ দিনে মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা দিতে জনসমুদ্রে পরিণত হয় নয়াপল্টন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সকাল ৯টা থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমাদান শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নয়াপল্টন এলাকায় দলটির কর্মী-সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। বন্ধের দিন থাকায় গতকাল যানবাহনও কম চলে। ভিআইপি সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেয় নেতা-কর্মীরা। নেতা-কর্মীদের সে াত নামে নয়াপল্টনে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের জানান, আগামীকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে সাক্ষাৎকার শুরু হবে। স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মনোনয়ন বোর্ডে থাকবেন। প্রথম দিন রবিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা  দেড়টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগ এবং বেলা আড়াইটা থেকে রাজশাহী বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার হবে। সোমবার বরিশাল বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার হবে সকাল ৯টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত এবং বেলা আড়াইটা থেকে শুরু হবে খুলনা বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগের সাক্ষাৎকার হবে সকাল ৯টা থেকে বেলা  দেড়টা পর্যন্ত এবং বিকাল আড়াইটা থেকে কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগের সাক্ষাৎকার শুরু হবে। বুধবার সকাল ৯টা  থেকে  বেলা  দেড়টা পর্যন্ত হবে ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগের এবং বেলা আড়াইটা থেকে ঢাকা বিভাগের সাক্ষাৎকার। বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভাগওয়ারি সাক্ষাৎকারের সময়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তাদের সমর্থকদের নিয়ে আসতে পারবেন না। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তাদের সমর্থকদের সঙ্গে করে গুলশান কার্যালয়ে আনলে তা প্রার্থীর অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। গুলশান কার্যালয়কে কেন্দ্র করে এর আশপাশে আমন্ত্রিত মনোনয়নপ্রত্যাশী ও আমন্ত্রিতরা ছাড়া কেউ থাকতে পারবেন না। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারের সময়ে মহানগর ও জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাংগঠনিক ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদকগণ উপস্থিত থাকবেন। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারের সময়ে আবেদন ফরম জমাদানের রশিদ সঙ্গে আনতে হবে। গত ১২ নভেম্বর থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ফরম বিক্রি শুরু হয়ে শেষ হয় গতকাল রাতে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন ফরম গতকাল জমা দেওয়া হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মনোনয়ন ফরম জমা দেন তার ব্যক্তিগত সহকারী ইউনুস আলী। এ ছাড়া মনোনয়ন ফরম জমা দেন নোয়াখালী-৩ আসন থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও তার সহধর্মিণী শামীমা বরকত লাকী। ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেলের পক্ষে তার স্ত্রী কামরুন নাহার মনোনয়নপত্র জমা দেন। ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি রাজিব আহসান বরিশাল-৪ আসন থেকে, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান নরসিংদী-৩ থেকে ও সিনিয়র সহসভাপতি নোয়াখালী-১ আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমা দেন। চূয়াডাঙ্গা-১ থেকে শামসুজ্জামান দুদু, কুমিল্লা-৫ থেকে শওকত মাহমুদ, খুলনা-৩ আসন থেকে রাকিবুল ইসলাম বকুল, লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে মো. ইয়াছিন আলী, ময়মনসিংহ-১০ আসন থেকে মোজাম্মেল হক, ময়মনসিংহ-১১ আসন থেকে মোর্শেদ আলম, নোয়াখালী-৬ আসন থেকে আবদুল কাদের হালিমি, রাজবাড়ী-২ আসন থেকে অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া, পঞ্চগড়-১ আসন থেকে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির ও পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, পঞ্চগড়-২ থেকে ফরহাদ হোসেন আজাদ, ঢাকা-১৮ এস এম জাহাঙ্গীর ও মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন সাদী, কিশোরগঞ্জ-৬ থেকে শরিফুল ইসলাম, শরীয়তপুর-১ থেকে কে এম আমিনুল ইসলাম আমিন, কিশোরগঞ্জ-১ থেকে মো. মোফাজ্জল হোসাইন নিটুল, ফেনী-১ ও ২ আসন থেকে রফিকুল আলম মঞ্জু, ঢাকা-১৩ আসন থেকে অ্যাডভোকেট খন্দকার জিল্লুর রহমান, ময়মনসিংহ-১ থেকে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, নড়াইল-১ আসনে অ্যাডভোকেট বিএম সুলতান মাহমুদ মনোনয়নপত্র জমা দেন। সিলেট-২ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদীর লুনা ও তার বড় ছেলে ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াস। বিএনপি নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া লক্ষ্মীপুর-২, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী লক্ষ্মীপুর-৩, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আমিরুল ইসলাম খান আলিম, চট্টগ্রাম-১৫ আসন থেকে নাজমুল মোস্তফা আমিন, চট্টগ্রাম-১২ আসন থেকে সৈয়দ সাদাত আহমেদ ও সাইফুদ্দিন সালাম মিঠু এবং চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী মনোনয়নপত্র জমা দেন। ঢাকা-৬ আসন (সূত্রাপুর) থেকে সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন ও হাজী মোহাম্মদ লিটন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে উকিল আবদুস সাত্তার, ঢাকা-১৫ আসনে কারাবন্দী মামুন হাসানের পক্ষে তার স্ত্রী ডলি হাসান, ঢাকা-১২ থেকে সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা-১৬ আসন থেকে এস এম জাহাঙ্গীর, কুমিল্লা-১০ থেকে শামসুদ্দিন দিদার ও শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক, ঢাকা-৭ আসনে কারাবন্দী ইসহাক সরকারের পক্ষে তার সমর্থকরা, ভোলা-৩ থেকে হায়দার আলী লেনিন, বরিশাল-২ থেকে দুলাল হোসেন, মানিকগঞ্জ-৩ থেকে রুকসানা খানম মিতু, নেত্রকোনা-২ আসন থেকে এ টি এম আবদুল বারী ড্যানী, পটুয়াখালী-৩ থেকে হাসান মামুন, পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে এ বি এম মোশাররফ হোসেন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন মুন্সীগঞ্জ-১, শহীদুল্লাহ ইমরান নেত্রকোনা-৫, আবুল কালাম আজাদ টাঙ্গাইল-৭, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মাহতাব পিরোজপুর-৩, ফায়েজুল ইসলাম লাঞ্জু, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, মোকাদ্দেম হোসেন জামালপুর-৩, জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু চাঁদপুর-৫, কুমিল্লা-২ আসনে ওমর ফারুক মুন্না, বেলাল হোসাইন বগুড়া-১ ও পাবনা-৪ থেকে হাবিবুর রহমান হাবিব, কিশোরগঞ্জ-১ থেকে খালেদ সাইফুল্লাহ (ভিপি) সোহেল, বাগেরহাট-৪ থেকে মনিরুল হক ফরাজী, বাগেরহাট-৩ আসনে কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম ও লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, বাগেরহাট-২ কারাবন্দী মনিরুল ইসলাম খান, যশোর-৩ থেকে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কিশোরগঞ্জ-৫ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল ও ইশতিয়াক আহমেদ নাসির, কিশোরগঞ্জ-৪ থেকে সুরঞ্জন ঘোষ, ঢাকা-১০ থেকে শেখ রবিউল আলম, সুনামগঞ্জ-৩ থেকে নূরুল ইসলাম সাজু, সুনামগঞ্জ-৫ থেকে উমর ফারুক আল হাদী, ফেনী-৩ আসন থেকে বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ এবং ময়মনসিংহ-১০ থেকে আখতারুজ্জামান বাচ্চু মনোনয়ন জমা দেন। 

সর্বশেষ খবর