মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদক নীতিমালা, ২০১৮-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ নীতিমালার আওতায় প্রতি বছর ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে পাঁচজনকে মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদক দেওয়া হবে। প্রতি বছর ২ জানুয়ারি সমাজকল্যাণ দিবসে এ পদক দেওয়া হবে। গতকাল সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ নীতিমালার অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাদার অব হিউম্যানিটি বলতে প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাকে     যে মাদার অব হিউম্যানিটির স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, এর প্রতিফলন হিসেবে।’ মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, পদক দেওয়া হবে পাঁচটি ক্ষেত্রে। এগুলো হচ্ছে—বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনে অবদান; প্রান্তিক, অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষা, আত্মনির্ভরশীলকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি; প্রতিবন্ধী ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণ, জীবনমান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, ইনক্লুসিভ শিক্ষা বাস্তবায়ন ও সামাজিক সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান; সুবিধাবঞ্চিত, আইনের সংস্পর্শে আসা, আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশু, কারামুক্ত কয়েদি, ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তিদের কল্যাণ, উন্নয়ন, পুনরেকত্রীকরণ এবং কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এমন কোনো কর্ম, যা সমাজের মানুষের মেধা ও মননের বিকাশ, জীবনমান ও পরিবেশের উন্নয়ন, সমাজবদ্ধ মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং সর্বোপরি মানবকল্যাণ ও মানবতাবোধে সমাজ বা রাষ্ট্রকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করার কার্যক্রম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, পুরস্কারপ্রাপ্তদের ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম সোনায় তৈরি একটি পদক, মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদকের রেপ্লিকা, দুই লাখ টাকার চেক এবং সম্মাননা সনদ প্রদান করা হবে। এই জাতীয় পুরস্কার হবে স্বাধীনতা পদক, একুশে পদকের সমমানের। শফিউল আলম বলেন, প্রতি বছর কারা পুরস্কার পাবেন তা ঠিক করতে জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নেতৃত্বে একটি এবং জাতীয় পর্যায়ে মন্ত্রিসভার সবচেয়ে সিনিয়র মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি থাকবে। প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইনে নিপীড়নের মুখে পালিয়ে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় গত বছর যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘চ্যানেল ফোর’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ অভিধায় ভূষিত করে।

সায়মাকে মন্ত্রিসভার অভিনন্দন : এদিকে প্রতিবন্ধীদের প্রযুক্তিগত ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে প্রবর্তিত ‘ইউনেস্কো-আমির জাবের আল-আহমদ আল-সাবাহ পুরস্কার’-এর আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ডে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারপারসন নির্বাচিত হওয়ায় সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে অভিনন্দন জানিয়েছে মন্ত্রিসভা। সায়মা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা একই সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি।

শাহরিয়ার শহীদের মৃত্যুতে শোক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শাহরিয়ার শহীদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে মন্ত্রিসভা। ১৭ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।