শিরোনাম
বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

চিঠির অপেক্ষায় ঢাকায় প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চিঠির অপেক্ষায় ঢাকায় প্রার্থীরা

আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ সব দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী দলবল নিয়ে এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার আজ শেষ হচ্ছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গতকাল শেষ হয়েছে। এখন প্রার্থীদের অপেক্ষার পালা। নিজ নিজ দলের শীর্ষ নেতার স্বাক্ষরিত চিঠির অপেক্ষায় আছেন তারা। আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা না হলেও কারা দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন তা এরই মধ্যে জানাজানি হয়ে গেছে। সম্ভাব্য মনোনীত প্রার্থী সবাই রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করছেন। তারা এখন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত চিঠির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় এসব প্রার্থী নানা জনের কাছে তাদের অপেক্ষার কথা জানাচ্ছেন। চিঠির অপেক্ষায় যেন তাদের তর সইছে না। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত সোমবার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এবার তারা জোটগতভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবেন। ১৪ দল, জাতীয় পার্টি ও যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, দলীয় পার্লামেন্টারি বোর্ড কয়েক দফা বৈঠক করে ১৭ নভেম্বর দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। এরপর ১৪ দলের শরিকদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। যুক্তফ্রন্টের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। কেবল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি বাকি আছে। তবে কোন কোন আসন জাতীয় পার্টিকে দেওয়া হবে তা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা একরকম ঠিকঠাক করে রেখেছেন। কেবল জাতীয়   পার্টির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা দেওয়া হবে। অন্যতম বড় দল বিএনপি গত রবিবার নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করে। আজ তাদের সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ হবে। এরপর জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে দলটি প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবে বলে জানা গেছে। সে হিসেবে আগামী সপ্তাহের আগে বিএনপি জোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সম্ভাবনা কম। আর জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গতকাল শেষ হয়েছে। পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদসহ শীর্ষ নেতারা প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের আলোচনার ওপর। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২৮ নভেম্বর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। সে হিসেবে ২৪-২৫ তারিখের মধ্যেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে হবে। একাধিক প্রার্থী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য প্রস্তুতি নিতে তাদের অন্তত দুই দিন প্রয়োজন। তবে আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, ২৪ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হতে পারে। আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডসূত্রে জানা যায়, বর্তমান জাতীয় সংসদের দলীয় সিংহভাগ সদস্যই আবারও মনোনয়ন পাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত যা খবর তাতে বড়জোর ১৫ থেকে ২০টি আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন হতে পারে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সংসদ সদস্যরা তাদের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি জেনে গেছেন। তারাও দলবল নিয়ে টানা ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাই হোটেল-রেস্তোরাঁয় নেতা-কর্মীর প্রচণ্ড ভিড়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মিলিয়ে তৎকালীন ৪৮ জন সংসদ সদস্য মনোনয়ন তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে ধারণা করা হয়েছিল অন্তত শতেক আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় শেষ পর্যন্ত বেশির ভাগ বর্তমান সংসদ সদস্যের ওপরই আস্থা রেখেছেন। তবে কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার এবার দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়ার খবর চাউর হয়ে গেছে। ঢাকা-৫ আসনে বর্তমান সংসদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হাজী মো. সেলিম এবার একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বলে খবর বেরিয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ এবং বর্তমানে বাকশক্তিহীন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্বোচ্চ ৬৫ থেকে ৭০টি আসন আওয়ামী লীগ শরিক দলগুলোকে দিতে পারে। আসন ভাগাভাগির নামে আসন হারাতে চায় না দলটি। বরং আসন ভাগাভাগি করে জয়লাভকেই লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের উচ্চাভিলাষী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা কম।

সর্বশেষ খবর