বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

একা সিদ্ধান্ত নেব, তোমরা মেনে নেবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

একা সিদ্ধান্ত নেব, তোমরা মেনে নেবে

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, প্রাথমিকভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করব। তারপর জোট হলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, রাজনীতির মেরুকরণে জোট করতে হলে আমি একা সিদ্ধান্ত নেব। প্রেসিডিয়ামের সভায় ওই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমাকে একক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আমি ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত দেব। তোমরা মাঠে চলে যাও। গতকাল রাজধানীর   ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ মন্তব্য করেন। এ সময় উপস্থিত জাপার ৭৮০ মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩০০ আসনে প্রার্থী চেয়ে বারবার স্লোগান দিতে থাকেন। এইচ এম এরশাদ বলেন, দলের জন্য তার চেয়ে কেউ বেশি ত্যাগ করনি। তিনি সাত বছর জেল খেটেছেন। তাকে জেলে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। তিনি একা সারা দেশে ছুটে বেড়িয়েছেন। তিনি বলেন, আমি যে সিদ্ধান্ত নেব পার্টি ও তোমাদের ভালোর জন্য নেব। তোমরা মেনে নেবে তো? তখন জবাব আসে ‘জি’। কিন্তু কয়েক সেকেন্ড পরেই আবার ‘তিনশ তিনশ’ স্লোগান ওঠে। এরশাদ বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে আমার কাজটা অনেক কঠিন। অনেককে বাদ দিতে হবে। তোমরা সবাই আমার সন্তানতুল্য কাকে রেখে কাকে বাদ দিব। যাকে বাদ দিব মেনে নিতে হবে। সবাইকে পার্টির জন্য ত্যাগ করতে হবে। এরশাদ বলেন, এখনো মামলা আছে আমার নামে। একটা দিনের জন্যও মুক্ত ছিলাম না, এখনো নেই। আমার মতো দুঃখী রাজনীতিবিদ আর কেউ নেই। খালেদা জিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারাগারে আমার চিকিৎসা হয়নি। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এরশাদকে মরতে দাও। তিনি বলেন, এরশাদ মরে নাই, জাতীয় পার্টি এখনো বেঁচে আছে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিকে বাঁচিয়ে রেখেছি, আজকের দিনটির জন্য। আজ মাঠে আছে আওয়ামী লীগ আর জাতীয় পার্টি। আর কোনো দল নেই। এরশাদের পর বক্তব্য দেন পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, জোট থেকে যে আসনগুলো পাব। সেগুলো জয় নিশ্চিত হবে। না হলে সম্ভব নয়। এ সময় আবার ‘তিনশ তিনশ’ স্লোগান ওঠে। শেষে স্লোগানের মধ্যেই দলীয় সংগীত ‘নতুন বাংলাদেশ গড়ব মোরা, নতুন করে আজ শপথ নিলাম... গাওয়া শুরু করেন। অন্যদেরও গাওয়ার অনুরোধ করেন। এদিকে কনভেনশন সেন্টারের সামনে মীর আবদুস সবুর আসুদ, আযম খান, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, আলহাজ মিজানুর রহমান, লিয়াকত হোসেন খোকা, মো. নোমান মিয়া, আবুল কাশেম রিপনসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী নেতা-কর্মীদের নিয়ে শো-ডাউন করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাপা একটা ফ্যাক্টর। আমরা আগামীতে সরকার গঠন করব। আমরা সিদ্ধান্ত নেব কোন দলকে পাশে রাখব। জাপা মহাসচিব বলেন, এইচ এম এরশাদ যাকে সমর্থন দেন তিনি সরকার গঠন করেন। আর যে দলকে সমর্থন দেন না সে দলের ওপর নেমে আসে জেল-জুলুম। তিনি বলেন, পার্টির প্রেসিডিয়ামে সিদ্ধান্ত হয়েছে এইচ এম এরশাদ এককভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন আগামী জাতীয় পার্টি কীভাবে নির্বাচন করবে। আমরা সবাই পিতৃতুল্য পল্লীবন্ধু এরশাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেব। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব বোর্ডের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বোর্ডের সদস্য হলেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সুনীল শুভ রায়, আলহাজ আতিকুর রহমান, মুজিবুর রহমান সেন্টু।

সর্বশেষ খবর