শুক্রবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সরকারি দলের লোকজন ইসির জনসংযোগে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি দলের লোকজন ইসির জনসংযোগে

কলামিস্ট ও সুজনের নির্বাহী সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, সরকারের অসন্তোষ নিয়ে নির্বাচন কমিশন কাজ করতে পারবে না। যেভাবে তারা কাজ করতে চায় সেভাবে তারা করতে পারছে না। সরকারি দলের লোকজন যেভাবে নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করছেন তাতে মনে হচ্ছে সরকারি দলের লোকজন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগে নেমেছেন। এ অবস্থায় জনগণের আস্থা ফেরাতে হলে তাদেরই (নির্বাচন কমিশন) প্রমাণ করতে হবে তারা দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম, স্বচ্ছ নির্বাচন করতে পারবে। নির্বাচন কমিশনকে তাদের স্বচ্ছতা ও দায়িত্ব দৃশ্যমান করতে হবে। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে গতকাল ‘নির্বাচনী ইশতেহার : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সুজন সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান। আরও বক্তব্য রাখেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, নির্বাহী সদস্য সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার রায় প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে কী থাকতে হবে— এ বিষয়ে নয় দফা লিখিত সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তারা যে ইশতেহার ঘোষণা করবে তা যেন ক্ষমতায় যাওয়ার পর বাস্তবায়ন করা হয়। ক্ষমতায় যাওয়ার পর তারা তাদের অঙ্গীকার অধিকাংশই বাস্তবায়ন করে না। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনে ইশতেহার হলো দলের সঙ্গে নাগরিকদের অলিখিত চুক্তি। সেখানে দেশের সাধারণ নাগরিকদের আশা-প্রত্যাশা প্রতিফলন থাকে। তাই আমরা নাগরিকরা কী ধরনের উন্নয়ন চাই, সেটি তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরি। তিনি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়ন করার আহ্বান জানান। আইনজীবী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, স্বাধীন দেশে নির্বাচনের সময় আমি আমার মতামত প্রকাশ করতে পারব না। তাহলে নির্বাচন কমিশন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেবে। এটা থাকলে জনগণ কীভাবে তাদের গণতান্ত্রিক স্বাধীন মতামত ব্যক্ত করবে? নির্বাচনী ইশতেহার বিষয়ে সুজনের লিখিত সুপারিশে বলা হয়, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী হয়ে রাজনীতি করতে হবে। রাষ্ট্রীয় আদর্শের সঙ্গে দলগুলোর আদর্শের সঙ্গতি থাকতে হবে। শাসন ব্যবস্থার একচ্ছত্র প্রাধান্যের অবসান করতে হবে। সরকার ও দেশ পরিচালনায় জনগণের মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রাধিকার দিতে হবে, যাতে সত্যিকার অর্থে জনগণের সম্মতির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রয়োজনীয় নির্বাচনী সংস্কারের রূপরেখা দিতে হবে, নির্বাচনে প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা, হলফনামার সংস্কার,  হলফনামা যাচাই-বাছাই, নির্বাচনী ব্যয়ে স্বচ্ছতা, না ভোটের বিধান করতে হবে। সাংবিধানিক সংস্কার, মেয়াদের সীমা নির্ধারণ, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদ, গণভোট, রিকল ব্যবস্থা, আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ধর্মনিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বশেষ খবর