শিরোনাম
রবিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনের পর নাগরিক কমিশন করবে সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনের পর নাগরিক কমিশন করবে সিপিডি

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

গত দশ বছরে দেশের ব্যাংক খাত থেকে ২২ হাজার ৫০২  কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। ব্যাংক খাতের বিপর্যস্ত পরিস্থিতি ও আর্থিক সংকট গভীর করছে। দেশের ব্যাংক খাতের প্রকৃত চিত্র চিহ্নিত করতে নাগরিক কমিশন গঠন করবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। জাতীয় নির্বাচনের পরই এ কমিটি গঠন করা হবে। এ নাগরিক কমিটি ব্যাংক খাতের সমস্যা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ তুলে ধরবে। গতকাল রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে আমরা কী করব’ শীর্ষক এক সংলাপে এ তথ্য জানান সিপিডির বিশেষ ফেলো  দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ, বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন প্রমুখ। দেবপ্রিয় বলেন, লাগামহীন খেলাপি ঋণ, যাচাই-বাছাই ছাড়া ঋণ অনুমোদন, ঋণ দেওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, ব্যাংকারদের পেশাদারিত্বের অভাবে চরম সংকটাপন্ন দেশের ব্যাংক খাত। এর মূল কারণ রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদন, পরিচালনা পর্ষদে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের যুক্ত করা, পরিচালকদের দুর্বৃত্তায়ন, দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনা এবং সব শেষে ঋণ দেওয়ায় সরাসরি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। তিনি বলেন, নির্বাচনের পর ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি নিয়ে নাগরিক কমিশন করা হবে। দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংকার অর্থনীতিবিদরা থাকবেন এই কমিশনে। নাগরিক কমিশন ব্যাংক খাতের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবে। ব্যাংক খাত নিয়ে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করা হবে। সমাধানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরবে এ কমিশন। দেবপ্রিয় বলেন, ব্যাংক খাত অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। এ হৃৎপিণ্ড সচল রাখতে সবাইকে  জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি এসব অনিয়ম ঠেকাতে ও ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালীকরণ, নতুন ব্যাংক অনুমোদন না দেওয়া, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিচারিক ব্যবস্থাসহ জরুরি ভিত্তিতে পাঁচটি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। মূল প্রবন্ধে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে গেল এক দশকে ব্যাংক  থেকে সাড়ে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। যা পদ্মা সেতু নির্মাণ খরচের চার ভাগের তিন ভাগ। এতে বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল অবধি সরকারি- বেসরকারি ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলিয়ে ১৪টি ব্যাংকের মাধ্যমে এসব অর্থ খোয়া গেছে। বাড়তি খেলাপি ঋণ, যাচাই-বাছাই ছাড়া ঋণ অনুমোদন, ঋণ দেওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, ব্যাংকারদের পেশাদারিত্বের অভাবে চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় এখন দেশের ব্যাংক খাত। একই সঙ্গে রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদন, পরিচালনা পর্ষদে রাজনীতিকদের যুক্ত করা, পরিচালকদের দুর্বৃত্তায়ন, দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনা ও সব শেষে ঋণ দেওয়ায় সরাসরি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে বিপর্যস্ত হচ্ছে দেশের ব্যাংকগুলো। সংলাপে দেশের আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞ, সাবেক ব্যাংকার ও আমলারা নানা সমস্যা তুলে ধরে সমাধানের পরামর্শ দেন।

সর্বশেষ খবর