শিরোনাম
বুধবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

হোপের কাছেই পরাজয়

সিরিজে সমতা আনল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

মেজবাহ্-উল-হক

হোপের কাছেই পরাজয়

একাধিক ক্যাচ মিস করে টাইগাররা

সাকিব পয়ষট্টি, মুশফিক বাষট্টি, তামিম পঞ্চাশ এবং মাহমুদুল্লাহর লড়াকু ত্রিশ। তারপর বল হাতে ক্যারিবীয় দলপতি রোভম্যান পাওয়েলকে আউট করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েও দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন মাশরাফি। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান সাই হোপ ১৪৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেটে জিতিয়ে দিলেন। সিরিজে এখন ১-১ সমতা। অলিখিত ফাইনাল হবে সিলেটে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওয়ানডেটি ছিল পঞ্চপাণ্ডবের শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। একই সঙ্গে পাঁচ সিনিয়র মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ মিলে বাংলাদেশের জার্সিতে ১০০টি ম্যাচ খেলে ক্রিকেটের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সূচিত করলেন। তবে এই স্মরণীয় ম্যাচটি জিতে অবিস্মরণীয় করে রাখতে পারল না বাংলাদেশ। 

তামিম ইকবাল ইনজুরিতে থেকে ফেরার পর আগের ম্যাচে উড়ন্ত এক ক্যাচে নিজের উপস্থিতি জানান দিলেও তার ব্যাটে ছিল আড়ষ্টতা। কিন্তু গতকাল ক্যারিবীয় পেসার কেমো পলের বল লং অন দিয়ে উড়িয়ে বাউন্ডারি রশির বাইরে আচড়ে ফেলেই যেন আড়মোড়া ভাঙেন ড্যাসিং ওপেনার। তারপর দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি দিয়েই ফেরেন ছন্দে। সেই সঙ্গে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক (টেস্ট, ওয়ানডে, টি-২০) ক্রিকেটে ১২ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন।

তামিম ছক্কা হাঁকিয়েছেন ফ্রি-হিটে। ফ্রি-হিট থেকে ছক্কা হাঁকিয়েছেন সাকিবও। ইনিংসের দুই ফ্রি-হিটে দুই বন্ধুর দুই ছক্কাই যেন জানিয়ে দিল বাংলাদেশ এখন ফ্রি-হিটের সুবিধা বুঝিয়ে নিতে শিখেছে! অবশ্য আগের বলটি ‘নো’ না হলে ড্রেসিং রুমেই ফিরে যেতে হতো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে। কেন না ক্যারিবীয় গতি তারকা ওশেন থমাসকে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ হয়েছিলেন সাকিব। ফ্রি-হিট পেয়ে কালবিলম্ব না করে উড়ন্ত বাউন্ডারি হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে ফেলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

মিস্টার ডিপেন্ডেবল তো অর্ধশতক পূরণ করেছিলেন তামিম-সাকিবের আগেই। ৬২ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচে দুই হাফ সেঞ্চুরি। মুশফিকের ইনিংসে কোনো ছক্কা নেই, আছে ৫টি দৃষ্টিনন্দন চারের মার। তবে তার ইনিংসের হাইলাইটস নিশ্চয়ই ক্যারিবীয় স্পিনার রোস্টন চেজের পর পর দুই বলে সুইপ ও ফ্লিক থেকে পাওয়া দুই বাউন্ডারি।

তিন সিনিয়র সাকিব, তামিম ও মুশফিকের দিনে হতাশ করেননি আরেক সিনিয়র মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। তিনিও খেলেছেন ৩০ রানের দারুণ এক ইনিংস।

কাল দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার লিটন দাসের ইনজুরি এবং হাসপাতালে প্রেরণ বাংলাদেশকে প্রচণ্ড ধাক্কা দিয়েছিল। তারপর দ্রুত ইমরুলের বিদায়ে বিপর্যয়েই পড়ে যায় স্বাগতিকরা। এরপর তামিমের সঙ্গে মুশফিকের ১১১ রানের জুটি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে ফিরে আবার ব্যাট হাতে বাইশগজে নেমেছিলেন লিটন। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। লোয়ার অর্ডারে আলো ছড়াতে পারেননি সৌম্যও। সে কারণে স্লোক ওভারের সুবিধাটা নিতেই পারেনি বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারে এসেছে মাত্র ২৬ রান। সে কারণেই ২৮০-২৯০ রানের ইঙ্গিত দিয়েও বাংলাদেশ আটকে যায় ২৫৫ রানেই। ব্যাটিংয়ে যে ২০-৩০ রান কম হয়েছিল, শেষ মুহূর্তে তাই কাল হয়ে দাঁড়াল। পঞ্চপাণ্ডবের ঐতিহাসিক ম্যাচে স্বপ্নভঙ্গ হলো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর