সোমবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

হামলা সংঘর্ষ ভাঙচুর অব্যাহত

টাঙ্গাইলে লতিফ সিদ্দিকী, নরসিংদীতে মঈন খান, নোয়াখালীতে জয়নুল আবদিন ফারুকের গাড়িবহরে হামলা, নাটোরে দুলুর স্ত্রীর প্রচারণায় বাধার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ঘিরে বিএনপিসহ বিরোধী প্রার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সারা দেশের অন্তত ৯ জেলায় প্রার্থীদের ওপর হামলা, গুলি ও তাদের গাড়িবহরে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নরসিংদী, নাটোর, সাতক্ষীরা, ভোলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, বাগেরহাট, রাঙামাটি ও টাঙ্গাইলে এসব ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ সময় সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের হামলায় অন্তত শতাধিক আহত হয়েছে। ঢাকা-১৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আহসান উল্লাহ হাসানের স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। ঢাকা-১১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি এম এ কাইয়ুমের স্ত্রী শামীম আরা বেগমের সব পোস্টার রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গ্রেফতার করা হয়েছে সাতক্ষীরা-৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা গাজী নজরুল ইসলামকে। হামলার ঘটনা ঘটেছে সাবেক মন্ত্রী টাঙ্গাইল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর প্রচার গাড়ির বহরে। নরসিংদীতে বিএনপির প্রার্থী ও দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের গাড়িবহরে গুলি ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। নাটোরে দুলুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবির নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নোয়াখালীতে বিএনপি প্রার্থী জয়নুল আবদিন ফারুক ও বাগেরহাটের আরেক প্রার্থী এম এ সালামের গাড়িবহরে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজয় দিবসের ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলকে লাঞ্ছিত ও তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। রাঙামাটিতে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বাধা, হামলা, সংঘর্ষের ঘটনা শুরু হয়। এর মধ্যে প্রথম দিনই অন্তত পাঁচ স্থানে বাধার খবর পাওয়া যায়। পরদিন মঙ্গলবার ১৮, বুধবার ১৭, বৃহস্পতিবার ২৩, শুক্রবার ৮ জেলায় এবং শনিবার ১৯ জেলায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— ঢাকা : নানামুখী বাধা উপক্ষো করে রাজধানীতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপির প্রার্থীরা। ঢাকা-১৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আহসান উল্লাহ হাসানের স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। ঢাকা-১১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শামীম আরা বেগমের সব পোস্টার রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ঢাকা-৪ আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে গণতন্ত্র রক্ষায় ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী মহানগর বিএনপি নেতা আহসান উল্লাহ হাসানের স্ত্রী রিনা হাসানকে মিরপুর ৬ নম্বরের বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়া প্রচারণায় নেমে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের পিটুনিতে আহত হয়েছেন হাসানের অন্তত ১৫ জন নারী কর্মী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আহসান উল্লাহর স্ত্রী রিনা হাসানের নেতৃত্বে শতাধিক নারী কর্মী লিফলেট বিতরণ করছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। হাসান জানান, হামলার পর ১৩ নম্বর সড়কের বাসভবন থেকে তার স্ত্রী রিনা হাসান, শ্যালিকা রুমানা আক্তারসহ আরেক স্বজনকে আটক করে নিয়ে যায় পল্লবী থানা পুলিশ। ঢাকা-১১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শামীম আরার সব পোস্টার রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। শনিবার রাতে একযোগে ভাটারা, বাড্ডা, হাতিরঝিল ও রামপুরা থানা এলাকায় লাগানো সব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ প্রসঙ্গে শামীম আরা বেগম বলেন, ক্ষমতাসীনরা এবার একতরফা প্রচারণা চালিয়েও পার পাবে না। মানুষের মনে ধানের শীষ।  পোস্টার রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেললেও ৩০ ডিসেম্বর কেউ ভোটারদের ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এদিকে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করার কথা জানিয়ে ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-কদমতলী) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়েছেন। গতকাল দিনভর নিজের সংসদীয় আসনে শতাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালান তিনি। সকালে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড বিক্রমপুর হাউজিং থেকে দিনের প্রচারণা শুরু করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। এ সময় এলাকার অলিগলিতে গিয়ে প্রচারপত্র বিলি করেন এবং ভোটারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোট ও দোয়া চান। নরসিংদী : নরসিংদী-২ আসনের বিএনপি প্রার্থী ড. আবদুল মঈন খানের গণসংযোগে হামলা হয়। এ সময় বিএনপির ৫০ নেতা-কর্মী আহত হন। গতকাল দুপুরে পলাশ উপজেলার পাঁচদোনা বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, দুপুরে পলাশের নির্বাচনী এলাকা পাঁচদোনা বাজারে নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করতে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পলাশ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ড. আবদুল মঈন খান। গণসংযোগ ও প্রচারণা চালানোর সময় ৫০-৬০ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশের সামনেই প্রকাশ্যে গুলি ছুড়তে থাকে তারা। প্রাণ বাঁচাতে মঈন খানসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা বাজারের একটি দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ সময় বিএনপির ১০ নেতা-কর্মী আহত হন। পাঁচদোনা ফাঁড়ির ইনচার্জ ইউসুফ আহাম্মেদ জানান, দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে নরসিংদী-৪ আসনের বিএনপির প্রার্থী সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল গতকাল দুপুরে মনোহরদীর হাফিজপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘একের পর এক হামলা ও মামলা হলেও প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে। এতে নির্বাচন করার মতো কোনো অবস্থা বিরাজমান নাই। হাজারও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এখনো আমরা নির্বাচনে আছি, আগামীতেও থাকব। আওয়ামী লীগ যত হামলা ও ত্রাস করুক না কেন, ৩০ তারিখে ভোটের মাঠে আমরা থাকব।’ টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সরাতৈল গোহালিয়া বাড়ি এলাকায় টাঙ্গাইল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর নির্বাচনী প্রচার গাড়ির বহরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ হামলায় লতিফ সিদ্দিকী ওই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীকে দায়ী করেছেন। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী তিনি এখানেই লেপকাঁথা নিয়ে ঘুমিয়ে থাকেন। এর আগে  লতিফ সিদ্দিকী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে প্রধানমন্ত্রীর এ আশ্বাসে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু নয়, পরিবেশ ভয়াবহ। যতক্ষণ পর্যন্ত এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হবে ততক্ষণ তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করবেন বলে জানান লতিফ সিদ্দিকী। নাটোর : নাটোরে নির্বাচনী প্রচারণার সময় হামলার শিকার হয়ে সাত বিএনপি কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল বেলা ১টার দিকে শহরের স্টেশন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাটোর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবি বেলা ১১টার দিকে দলীয় কার্যালয় থেকে নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেন। শহরের স্টেশন বাজার এলাকায় গণসংযোগ করতে গেলে তার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। পরে আহতদের উদ্ধার করে বিএনপি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাবিনা ইয়াসমিন ছবি অভিযোগ করে বলেন, ‘শনিবার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শিমুল আমাকে নির্বিঘ্নে প্রচারণার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ (রবিবার) তার সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’ নোয়াখালী : নোয়াখালীর সেনবাগে গতকাল সকালে বিএনপি প্রার্থী জয়নুল আবদিন ফারুকের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনটি গাড়ি ভাঙচুর ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালামসহ পাঁচজন আহত হন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার সময় উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ও ভাঙচুর করা হয়েছে। জয়নুল আবদিন ফারুক জানান, সকালে বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তিনি উপজেলা সদরে ফুল দিতে যান। এ সময় সেনবাগ বাজারের কাছে রাস্তার ওপর তাদের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। এদিকে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে শনিবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের ঘটনায় ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়ী করেছেন নৌকার প্রার্থী এইচ এম ইব্রাহীম। রাতেই সোনাইমুড়ীতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নিজেদের অস্ত্রে আহত হয়ে প্রতিপক্ষ ও পুলিশের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেন খোকন। বাগেরহাট : বাগেরহাট-১ ও ২ আসনে গণসংযোগের সময় বিএনপির প্রার্থীদের গাড়িবহরে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। পৃথক দুই হামলায় বিএনপির অন্তত ২২ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে শহরের হরিণখানা পাঁচ রাস্তার মোড়ে বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া) আসনের বিএনপি প্রার্থী এম এ সালামের গাড়িবহরে হামলা হয়।  হামলায় বিএনপির প্রার্থী এম এ সালামসহ অন্তত ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হন। এদিকে মোল্লাহাট উপজেলার কোদালিয়া বাজারে দুপুরে গণসংযোগের সময় বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট) আসনের বিএনপির প্রার্থী শেখ মাসুদ রানার গাড়িবহরে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। হামলায় বিএনপির প্রার্থী মাসুদ রানাসহ ১২ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি ও বাগেরহাট সদর আসনের প্রার্থী এম এ সালাম বলেন, ‘দুপুরে শহরের হরিণখানা এলাকার পাঁচ রাস্তার মোড় থেকে গণসংযোগে যাওয়ার সময় নৌকা মার্কার কর্মীরা আমাদের গাড়িবহরে হামলা করে। এতে আমার ৯ নেতা-কর্মী আহত হয়। বহরে থাকা চারটি মাইক্রোর গ্লাস ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বাগেরহাট-১ আসনের প্রার্থী শেখ মাসুদ রানা বলেন, ‘আমরা কোদালিয়া বাজারে গণসংযোগের সময় নৌকা প্রতীকের শতাধিক কর্মী আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে আমিসহ আমার ১২ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকজন কর্মীর মোবাইল ফোন নিয়ে যায় হামলাকারীরা।’ রাঙামাটি : রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা মাঠে শহীদ মিনার চত্বরে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের ২২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় থানা কম্পাউন্ডের সামনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলের গাড়িতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হামলা ও ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগের দিন শনিবার শ্যামলের স্ত্রীর গাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিজয় দিবসে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী শ্যামলের গাড়িতে লাঠিসোঁটা, রড ও ইটপাটকেল নিয়ে হামলা চালায়। এতে তিনজন আহত হন। ঝালকাঠি : শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির প্রধান কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান, একদল দুর্বৃত্ত বিএনপি অফিসে প্রবেশ করে অফিসের দরজার কাচ, চেয়ার টেবিল, আসবাপত্র ও টিভি ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ভোলা : সকালে ভোলার বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন নেতা-কর্মী আহত হন। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ২০টি মোটরসাইকেল। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস। ছবি তুলতে গেলে ক্যামেরা ভাঙচুর এবং সাংবাদিকদের মারধর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ভোলা-২ আসনের বিএনপি প্রার্থী হাফিজ ইব্রাহীম ঢাকা থেকে লঞ্চে তার নির্বাচনী এলাকা বোরহানউদ্দিন পৌঁছান। তাকে স্বাগত জানাতে দলীয় নেতা-কর্মীরা বোরহানউদ্দিনের হাকিমুদ্দিন লঞ্চঘাটে এসে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। নেত্রকোনা : সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের হামলার শিকার নেত্রকোনা-৪ আসনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী জলি তালুকদার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শনিবার রাতে মোহনগঞ্জ উপজেলার সমাজ ও মাঘানের দুটি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় বাড়ি বাড়ি গণসংযোগ করে ফেরার পথে মানশ্রী পালপারা এলাকায় আমাদের ওপর ভয়াবহ এবং নৃশংস হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা।’ বরিশাল : জেলার গৌরনদী উপজেলার ধানডোবা গ্রামে যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা ও বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে বিএনপি প্রার্থী এম জহির উদ্দিন স্বপনের নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার অন্যতম সমন্বয়ক মো. রফিকুল ইসলাম কাজলের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে হামলাকারীরা যুবদল নেতার বসতঘরের তিনটি জানালা ভেঙে ফেলে ও দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। দরজা ভাঙতে না পেরে তারা যুবদল নেতার পরিবারের সদস্যদের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে বাড়ি ছাড়ার হুঁশিয়ারি দেয়। এর আগে বাড়ি এলে কাজলের হাত-পা ভেঙে পঙ্গু করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয় তারা। এদিকে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী এম জহির উদ্দিন স্বপনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন গৌরনদীর পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারিছুর রহমান হারিছ। শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় গৌরনদী মডেল থানায় এই জিডি করেন তিনি। মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জ-২ আসনের মহাজোটভুক্ত জাতীয় পার্টির প্রার্থী এস এম আবদুল মান্নানের নির্বাচনী পথসভা ও নির্বাচনী কেন্দ্রে গতকাল ছাত্রলীগ হামলা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন আসনটির প্রার্থী এস এম আবদুল মান্নান।  পাবনা : পাবনা সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি কে এম মুছা ও সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলালকে পুলিশ গতকাল পুরনো মামলায় গ্রেফতার করেছে। রাঙামাটি : রাঙামাটিতে গতকাল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন সামান্য আহত হয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর