শনিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন

বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ

প্রতিদিন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসবেন কি না, তা নির্ধারণ করতে আগামীকাল ভোট দিতে যাচ্ছেন দেশেন নাগরিকরা। এর ওপর ভিত্তি করে গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশকে বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে তুলে এনেছে শেখ হাসিনার সরকার। তবে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগও রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা আশা করছেন, ১০ কোটি ভোটার সহিংসতাকে ঘৃণা করে দেশের অভূপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে গুরুত্ব দেবেন। এর মধ্যে ২০০৯ সাল থেকে মাথাপিছু আয় তিনগুণ বেড়ে যাওয়া ও গত এক দশকে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হওয়ার বিষয় রয়েছে। এই প্রবৃদ্ধির বেশির ভাগই এসেছে দেশের ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের গার্মেন্টস খাত থেকে, যেখানে ৪৫ লাখ মানুষ কাজ করেন। এ খাতে নারীদের অংশগ্রহণ দ্বিগুণ বেড়েছে। মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের সুবিধা বাড়ায় গড় আয়ু ৭২ বছর হয়েছে, যা ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট নামের গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শাহাব এনাম খান বলেন, বিশ্বের অতি ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় উঠে আসার হার বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। এর অর্থ এই নয় যে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সুবিধা পাচ্ছেন। শাহাবের মতে, গত আগস্ট মাসে অনিরাপদ গাড়ি চালনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিষয়টি দেখা যায়। এ ধরনের অনেক বিষয় নিষ্পত্তিমূলক সিদ্ধান্তের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আইনশৃঙ্খলার নামে জননিরাপত্তার বিষয়গুলোর পাশাপাশি বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা আছে কি না, তা নির্ধারক হয়ে উঠবে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, রক্তক্ষয়ী নির্বাচনী প্রচারের পরও শেখ হাসিনার (৭১) প্রধানমন্ত্রী থাকার পক্ষে পরিস্থিতি অনুকূল রয়েছে। বিরোধীরা চলমান পরিস্থিতিকে দেশটির ৪৭ বছরের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বেশি শ্বাসরুদ্ধকর’ বলে উল্লেখ করেছে। নির্বাচন-পূর্ব কয়েক মাসে শেখ হাসিনার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়াসহ বিরোধীপক্ষের অসংখ্য নেতা-কর্মী কারাগারে আছেন কিংবা গুম হয়েছেন। আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ও মুক্তমত প্রকাশের সংগঠনগুলো অভিযোগ তুলেছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকাজে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য ভিসা দিতে অপ্রয়োজনীয়ভাবে দেরি করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনার বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন (৮২) বলেছেন, ‘প্রতিপক্ষের কর্মীদের ওপর পুলিশের হয়রানি নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে।’ ড. কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, তাঁদের জোটের ৭০ জনের বেশি প্রার্থীর মিছিল ও দলীয় কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। তাঁরা এখন নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে ভয় পাচ্ছেন। এ মাসের শুরুতে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান থেকে ফেরার পথে তাঁর নিজের গাড়িবহরেও  হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সমর্থকদের বিরুদ্ধে এই হামলার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার প্রথম দিনই সহিংসতায় আওয়ামী লীগের দুই সদস্য নিহত হন।

মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের তথ্য অনুযায়ী, শত শত মানুষকে জোর করে তুলে নেওয়া হয়েছে বা গোপন জেলখানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ছাড়া মাদক ব্যবসার অভিযোগে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৪৫০ জন নিহত হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর