বুধবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধারাবাহিক সাফল্যে তাজের অন্য কথা

ধারাবাহিক সাফল্যে তাজের অন্য কথা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয় করে বাঞ্ছারামপুরে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করলেন ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনে চারবারের এমপি তিনিই প্রথম। এ সংসদে সর্বোচ্চ ভোটের রেকর্ডটিও তার দখলে এসেছে। তিনি এবার পেয়েছেন ২ লাখ ৬৮ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ বলছেন, ক্যাপ্টেন তাজের এ সাফল্যে এক দিনে আসেনি। এর পেছনে রয়েছে অন্য কথা। বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় এ এলাকায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ছিল খুব দুর্বল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। এর পর তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। শুধু দলকে সুসংগঠিতই নয়, নির্বাচনী এলাকায় তিনি সর্বস্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন। এলাকার গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ান। তিনি প্রথমবারের মতো এমপি হন ১৯৯৬ সালে। এরপর ২০০৮ ও ২০১৪ সালে টানা এমপি হন তিনি। গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিনি চতুর্থবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন।  এর আগে এবি তাজুল ইসলাম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক। নবম সংসদে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দশম সংসদে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। জেলা পরিষদ সদস্য ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পর প্রথম প্রতিবাদকারী ক্যাপ্টেন তাজের কারণেই এখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। তিনি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর যে পরিমাণ উন্নয়ন করেছেন, অতীতে যারা এমপি ছিলেন, তারা তার ধারে-কাছেও নেই। বাঞ্ছারামপুরের উন্নয়নের সব দাবিদার তিনি। তিনি বলেন, ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম গণমানুষের নেতা। দলীয় নেতা-কর্মীদের ডাকে সব সময় সাড়া দেন বলেই হ্যাটট্রিক জয়ের রেকর্ডসহ চারবার নির্বাচিত হতে পেরেছেন তিনি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ করিম সাজু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম একজন দানবীর মানুষ। তিনি যেভাবে দলীয় নেতা-কর্মীসহ বাঞ্ছারামপুরের মানুষের পাশে থাকেন, তা সত্যিই অতুলনীয়। এ ছাড়া তিনি নির্বাচনী এলাকায় অসংখ্য ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান করে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, তাজ এমপি হওয়ার আগে মানুষের মধ্যে ধারণা ছিল চাকরি পেতে হলে এমপিকে টাকা দিতে হয় কিন্তু ধারণা পাল্টে দিয়েছেন ক্যাপ্টেন তাজ। যত ছেলেমেয়ের তিনি চাকরি দিয়েছেন, টাকা নেওয়া তো দূরের কথা, নিজের পকেট থেকে উল্টো প্রয়োজনীয় খরচ দিয়েছেন।  সোনারামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহীন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উপজেলার এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে ক্যাপ্টেন তাজের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সোনারামপুর ইউনিয়ন ছিল সবচেয়ে পিছিয়েপড়া একটি ইউনিয়ন। প্রতিটি গ্রাম ছিল একটি বি”িচ্ছন্ন দ্বীপ। আগে আমরা এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যেতে পায়ে স্যান্ডেল ও প্যান্ট- শার্ট পরে যেতে পারতাম না। কারণ কাদা-পানিতে সেগুলো ব্যবহার করতে পারতাম না। উপজেলা শহরে যেতে পানির জন্য যেতে পারতাম না। খুব কষ্ট হতো। অথচ ক্যাপ্টেন তাজ সাহেব এমপি হওয়ার পর থেকে প্র্রতিটি গ্রামে এখন পাকা রাস্তা। আগে যেখানে পানির কারণে গামছা নিয়ে চলাচল করতাম, সেখানে এখন গাড়ি চলে। মোদ্দা কথা, ক্যাপ্টেন তাজের উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা।

সর্বশেষ খবর