রবিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

জামায়াতকে ডিভোর্স দিয়ে এগোতে হবে

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান

জামায়াতকে ডিভোর্স দিয়ে এগোতে হবে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘‘আগামীতে জামায়াতের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই তা বিএনপিকে স্পষ্ট করতে হবে। কারণ কেউই জামায়াতকে পছন্দ করে না। বিশেষ করে জামায়াতকে নতুন প্রজন্ম ভালোভাবে নিচ্ছে না। তাই জামায়াতকে বিএনপির ক্লিয়ারলি ডিভোর্স দিতে হবে। নির্বাচনের আগে-পরে হওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের মামলা-মোকাদ্দমাগুলোও নিষ্পত্তি করা জরুরি বলে আমি মনে করি। এ নিয়ে তারা সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও করতে পারে। তবে যেসব মামলা হাই কোর্ট-সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে, সেগুলোকে ‘মিথ্যা’ বা ‘বানোয়াট’ বলা ঠিক হবে না।”

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর বিএনপির আগামী দিনে করণীয় কী- জানতে চাইলে এসব কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান। অধ্যাপক মীজান বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনে মূল বিষয়টা হলো, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে সবার ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছে এ দেশের জনগণ। তার সুদৃঢ় নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে জামায়াতকে বিএনপি ২২টি আসনে ধানের শীষ প্রতীক তুলে দিয়েছে। আগে তারা বলছিল, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির আদর্শের কোনো মিল নেই। আমার মনে হয়, ভোটে এই দুই ফ্যাক্টর ভীষণভাবে কাজ করেছে। জনগণ কিন্তু শেখ হাসিনার উন্নয়নকেই রায় দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল। ধানের শীষের প্রার্থী যে এজেন্ট দিতে পারেননি তা তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতারই বহিঃপ্রকাশ বলে আমি মনে করি। তাদের অভিযোগ ছিল, এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে, ঢুকতে দেয়নি। বাস্তবতা হলো, কোথাও এজেন্ট যায়নি। এটা মূলত সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই। বিরোধী দলের রাজনীতিতে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালের পর ২১ বছর এই প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আজ এ অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। তাদের কিন্তু সাংগঠনিক তৎপরতা থেমে থাকেনি।’ জবি উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি এখন পর্যন্ত কোনো গণমুখী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। হরতাল-অবরোধসহ যেসব কর্মসূচি তারা ইতিপূর্বে দিয়েছে, তা জনদাবি ছিল না। আগামী দিনেও তাদের ধ্বংসাত্মক, হিংসাত্মক কর্মসূচিতে যাওয়া ঠিক হবে না। কোনো ষড়যন্ত্রমূলক কর্মসূচিতে যাওয়া যাবে না। এটা তাদের কর্মীরাও পছন্দ করে না। তাদের নতুন কর্মসূচি নিয়ে এগোতে হবে। গণদাবি, কর্মসংস্থানসহ সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো নিয়ে মাঠে থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে যে কজন নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের সংসদে যাওয়া উচিত। সেখানে তারা বিশেষ গুরুত্ব পাবে। কারণ সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা সংখ্যার ওপর নির্ভর করে না। ১৯৭৩ সালে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাও কিন্তু সংসদকে প্রাণবন্ত করে তুলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছেন। আবার ১১৬ বা ১২৫ জন নির্বাচিত হয়েও সংসদে না থাকলে কোনো লাভ নেই।’

সর্বশেষ খবর