মঙ্গলবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
কেমন হবে এ সংলাপ

ঐক্যফ্রন্ট আলাদা বৈঠক ডেকেছে ২৮ জানুয়ারি

মাহমুদ আজহার

ঐক্যফ্রন্ট আলাদা বৈঠক ডেকেছে ২৮ জানুয়ারি

সদ্যসমাপ্ত ভোটে ‘ভরাডুবির’ পর এবার জাতীয় সংলাপের ডাক দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ২৮ জানুয়ারি বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ সংলাপ হবে। এতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শীর্ষ নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ ছাড়া সরকারবিরোধী অন্য সব রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তবে বাদ যাবে শুধু ২০-দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামী। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল হিসেবে তাদের সংলাপে ডাকা হবে না বলে জানা গেছে। সূত্রমতে, সংলাপে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধির মতামত নিয়ে সামনে পথ চলতে চায় ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সদ্যসমাপ্ত জাতীয় নির্বাচন কেমন হলো তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। প্রতিকূল পরিবেশেও গুটিকয় এমপি শপথ নিয়ে সংসদে যাবেন কিনা, তা নিয়েও সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হবে। খুব শিগগিরই গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্র সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। জাতীয় সংলাপের বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘২৮ জানুয়ারি আমরা সব দল ও মতের প্রতিনিধির সঙ্গে বসব। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি এতে অংশ নেবেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ মহাজোটকেও এতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনকে কে কীভাবে দেখছেন, ঐক্যফ্রন্টের গুটিকয় সংসদ সদস্যের এমপি হিসেবে শপথ নেওয়া ঠিক হবে কিনা- এসব নিয়ে আলোচনা হবে। এর মাধ্যমেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সামনে চলার পথ বেরিয়ে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’ তবে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা জাতীয় সংলাপ করব। এটা ঐক্যফ্রন্টের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু সরকারি দল বা মহাজোটকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা- তা আমি জানি না। তাদের ডাকার কোনো যৌক্তিক কারণ আছে কিনা- তাও আমার জানা নেই।’ জানা যায়, সদ্যসমাপ্ত নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত ট্রাইব্যুনালেও যাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সংসদীয় আসনগুলো থেকে অভিযোগগুলো লিখিত আকারে প্রস্তুত করা হয়েছে। ভোটে অনিয়মের সামগ্রিক ত্রুটি-বিচ্যুতি ঐক্যফ্রন্ট আইনি প্রক্রিয়ায় জাতির সামনে তুলে ধরতে চায়। এ নিয়ে মামলার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে। শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিম লেও যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট। ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধির কাছে ভোটের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদন ও ভিডিও ফুটেজ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে নিয়মিত কূটনৈতিকপাড়ায় দৌড়ঝাঁপ অব্যাহত রেখেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। বর্তমান সরকারকে সমর্থন না দিয়ে আরেকটি সুষ্ঠু ভোটের চাপ দিতে কূটনীতিকদের সহযোগিতাও চান তারা। এ প্রসঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘ভোটে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমনকি জাতিসংঘ সরকারকে ওয়েলকাম জানায়নি। এ থেকে বোঝা যায়, ভোটে অনিয়মের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অবহিত।’ জানা যায়, শিগগিরই ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় ধরনের শোডাউন করবে ঐক্যফ্রন্ট। এরপর জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে জনসভাও করতে চায় তারা। সেখানে বেগম জিয়ার কারামুক্তির পাশাপাশি সদ্যসমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম নিয়েও কথা বলবেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। একই সঙ্গে প্রতিটি সংসদীয় আসনের ভোট কেন্দ্রভিত্তিক অভিযোগ দায়ের করা হবে। সেখানে গণশুনানিতে অংশ নেবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। অতীতে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিএনপি আজ এ পর্যন্ত এসেছে। বিভিন্ন সময়ে অনেকেই দল ছেড়ে গেছেন। কিন্তু বিএনপির প্রাণ মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা দলকে কঠিন মুহূর্তেও আগলে রেখেছেন। বিএনপির ঐক্য আরও সুসংহত করতে আমাদের নতুনভাবে পথ চলতে হবে।’

সর্বশেষ খবর