বৃহস্পতিবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

মার্চেই ঢাকা উত্তর সিটির নির্বাচন

স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হাই কোর্টের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদের উপনির্বাচনে আর কোনো বাধা নেই। গতকাল হাই কোর্ট এ নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে এ সংক্রান্ত রুল খারিজ করেছে। এ আদেশের ফলে ডিএনসিসির উপনির্বাচন আগামী মার্চ নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানা গেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ডিএনসিসি উপনির্বাচনের পুনঃতফসিল করতে হবে। উপজেলা নির্বাচনের মাঝামাঝি নির্বাচন করে ফেলব।

বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর এবং বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে          গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল ডিএনসিসির মেয়র পদের উপনির্বাচন  ও সম্প্রসারিত অংশের কাউন্সিলর নির্বাচনের ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে রুল খারিজ করেন। এ আদেশের ফলে ডিএনসিসির উপনির্বাচনে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি ডিএনসিসির নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে রিট দায়ের করেন নতুন ওয়ার্ড হিসেবে যুক্ত হওয়া ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। নতুন ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ না হওয়ায় তারা এ নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট করেন। রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, স্থানীয় সরকার সচিব, উত্তর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে বিবাদী করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে ডিএনসিসি উপনির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশের দেয় হাই কোর্ট। একই সঙ্গে আদালত রুল জারি করে। এরপর ডিএনসিসির উপনির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। এদিকে ডিএনসিসি মেয়র পদের উপনির্বাচনের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় দ্রুত এ নির্বাচন করার চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। আগামী মার্চে শুরু হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের মাঝেই এ নির্বাচন করতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, ডিএনসিসি উপনির্বাচনের পুনঃতফসিল করতে হবে। এ নির্বাচন নিয়ে কমিশনের সঙ্গে বসতে হবে। আমরা তাড়াতাড়ি এ নির্বাচন করে ফেলব। এ ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোনো সমস্যা হবে কি না, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, উপজেলা নির্বাচনের কারণে ডিএনসিসি নির্বাচন নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। উপজেলা নির্বাচনের মাঝেই এ নির্বাচন করে ফেলব। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আদালতের কপি হাতে পেলে কমিশনের কাছে তা উপস্থাপন করা হবে। আজকালের মধ্যে হয়তো কপি হাতে পাওয়া যাবে। তারা বলেন, দ্রুত এ নির্বাচন করতে কোনো সমস্যা হবে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে উপজেলা নির্বাচন শুরু হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের সঙ্গে বা আলাদাভাবে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে এ নির্বাচন করা যেতে পারে। আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সেখানে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করে নির্বাচনের বিস্তারিত সময়সূচি দেওয়া হয়েছিল। পরে ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি দুটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন ও সম্প্রসারিত অংশের কাউন্সিলর নির্বাচন স্থগিত করে আদালত। আর ১৮ জানুয়ারি ছিল মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। তার আগে উত্তর সিটিতে মেয়র পদে ১৯ জন এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রায় ৫০০ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি দেওয়া তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ২১ ও ২২ জানুয়ারি এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি। আর ভোটের দিন ছিল ২৬ ফেব্রুয়ারি।

সর্বশেষ খবর