মঙ্গলবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
অক্সফামের প্রতিবেদন

২৬ ধনীর সম্পদ ৩৮০ কোটি মানুষের সম্পদের সমান

প্রতিদিন ডেস্ক

বিশ্বের ২৬ জন ধনী ব্যক্তির যে সম্পদ আছে তা ৩৮০ কোটি মানুষের মোট সম্পদের সমান। ওই ২৬ জন ধনীর সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার। বিশ্বের কোটিপতিদের সম্পত্তি প্রতিদিন আড়াই বিলিয়ন বৃদ্ধি পায়। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম গতকাল এমন তথ্য জানিয়েছে। অক্সফাম আরও বলছে, অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্যতা রক্ষা করতে হলে এসব ধনী ব্যক্তিদের ওপর বেশি করে করারোপ করতে হবে। বিশ্বব্যাপী ধনী ও দরিদ্রের এই বৈষম্য দূর করতে সরকারের পাশাপাশি ধনকুবেরদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে  আসন্ন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনের আগে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করল সংস্থাটি। প্রতি বছরের জানুয়ারিতে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা দাভোসের এ সম্মেলনে অংশ নেন। ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ধনীদের সম্পদ যে স্থির অবস্থায় আছে- এমন নয়। তাদের সম্পদ গত বছর প্রতিদিন ২৫০ কোটি ডলার করে বেড়েছে। উদাহরণ হিসেবে ফোর্বসের তালিকায় থাকা শীর্ষ ধনী অ্যামাজনের সিইও জেফ বেজোসের প্রসঙ্গ টানা হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, জেফ বেজোসের সম্পদ গত বছর ১১ হাজার ২০০ কোটি ডলার বেড়েছে। তার সম্পদের মাত্র ১ শতাংশ ১০ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার দেশ ইথিওপিয়ার পুরো স্বাস্থ্য বাজেটের সমান। ধনীর ধন বাড়লেও দরিদ্রের সম্পদ কমেছে। ৩৮০ কোটি মানুষের সম্পদ গত বছর ১১ শতাংশ কমেছে। ধনী ও দরিদ্রের সম্পদের এই বৈষম্য অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি জন-অসন্তোষকেও উসকে দিচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর উদাহরণ হিসেবে ফ্রান্সের চলমান ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এই আন্দোলনের শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা সামাজিক জীবনের নানা অসংগতির প্রতিবাদ হয়ে ওঠেছে। এই ক্ষোভের বড় একটি কারণ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ধনীদের কর রেয়াদের একটি সুযোগ দিয়েছেন। মূল্যস্ফীতির কারণে গরিবেরা জীবনধারণ করতে হিমশিম খাচ্ছে আর ধনীদের আরও ধন বাড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার-এটা মেনে না নিয়ে রাস্তায় এসে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন হাজারো বিক্ষোভকারী। অক্সফাম বলছে, গত বছর ৩৮০ কোটি মানুষের মোট সম্পদ ১১ শতাংশ কমেছে। ধনী ও গরিবের মধ্যে সম্পদের এই বিশাল ব্যবধানের কারণে দারিদ্র্যের মোকাবিলা করা অসাধ্য হয়ে পড়েছে। আর যা অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করছে। অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক উইনি বায়ানিমা এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘গোটা বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ এ নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ ও হতাশ।’ সরকার স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো খাতগুলোতে অর্থায়ন করছে না কিন্তু ঠিকই বিত্তবানদেরকে অনেক ক্ষেত্রে কর মওকুফ করে দিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর