শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

অনুসন্ধান চলাকালেই অবৈধ সম্পদ জব্দের সিদ্ধান্ত দুদকের

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনুসন্ধান চলাকালেই অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ জব্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের বিশেষ সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। দুদক চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষে কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে ‘অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের’ কার্যক্রম নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে দুদক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুনীর চৌধুরী বলেন, এখন থেকেই দুর্নীতির অনুসন্ধান বা তদন্তকালে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি দুদকের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কোনোক্রমেই দুর্নীতিবাজ কিংবা অন্য কাউকে এই সম্পদ ভোগ করতে দেওয়া হবে না। দুদকই ওই সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে। তিনি আরও বলেন, শুধু তাই নয় ২০০৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দুদকের মামলায় যত সম্পদ ফ্রিজ বা ক্রোক হয়েছে, তাও দুদকের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ সময় উপস্থিত আরেক মহাপরিচালক (আইন) মঈদুল ইসলাম বলেন, দুদক যখনই চাইবে অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সম্পদ জব্দ করতে পারবে। এর আগে সভায় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০০৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত অবৈধ সম্পদ সংক্রান্ত চলমান এবং কমিশনের পক্ষে রায় হয়েছে এমন সব মামলায় সম্পৃক্ত সব প্রকার অবৈধ সম্পদ জব্দ/ক্রোক/অবরুদ্ধ করে মামলার তালিকা অনুযায়ী রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে কমিশনে উপস্থাপন করতে হবে এবং এসব কার্যক্রমে যারা যুক্ত থাকবেন তাদের ফরোয়ার্ড ডায়রি অনুসরণ করতে হবে। ইতিমধ্যেই যেসব মামলায় আসামিদের শাস্তির পাশাপাশি আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে অথবা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাও রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেন দুদক চেয়ারম্যান। এখন থেকে প্রতিটি অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সম্পদ জব্দ/ক্রোক করতে হবে। অবৈধ সম্পদ ভোগ করার সুযোগ কাউকেই দেওয়া হবে না। অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে আনার জন্য দুদক ব্যবস্থা নেবে।

এসব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনোরকম দুর্নীতি, সম্পদের ক্ষতিসাধন কিংবা অব্যস্থাপনার সুযোগ না থাকে এমন একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য কেবিনেট ডিভিশন, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একটি যৌথসভায় আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সম্পদ ব্যবস্থাপনা করা যায় কি না-তা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন দুদক চেয়ারম্যান। এসব সম্পদের যারা জিম্মাদার হবেন, তাদের জবাবদিহিতার বিষয়টিও বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির একটি পথ বন্ধ করে আরেকটি পথ কখনই খুলতে দেওয়া যাবে না। সভায় তিনি বলেন, দুদকের যেসব মামলায় আসামিরা মারা গেছেন কিন্তু অবৈধ সম্পতি রয়ে গেছে এসব অবৈধ সম্পদ ক্রোক/জব্দ/বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। কমিশন আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধ দ-বিধি ১৬৬ ধারা উল্লেখ করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, কোনো ব্যক্তির ক্ষতি সাধনকল্পে সরকারি কর্মচারী কর্তৃক আইন আমান্যকরণ দ-নীয় অপরাধ, যা কমিশনের তফসিলভুক্ত অপরাধও। তাই আইন অমান্য করে জনগণের কোনো ক্ষতিসাধন কিংবা ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করা হলে আরও কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় কমিশনের অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির, গোয়েন্দা ইউনিটের পরিচালক, আইন অনুবিভাগের পরিচালক ও বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগের পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর