বৃহস্পতিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
৯১৯ কোটি টাকা পাচার

ক্রিসেন্ট চেয়ারম্যান গ্রেফতার, ১৭ জনকে আসামি করে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ৯১৯ কোটি টাকা পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ক্রিসেন্ট গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট ১৭ জনের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। ওই ১৭ জনের মধ্যে ১৩ জনই জনতা ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা। মামলার অন্যতম আসামি ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরকে গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টায় গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। গতকাল বিকালে সেগুনবাগিচার রাজস্ব ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ক্রিসেন্ট লেদার ৪২২ কোটি ৪৬ লাখ, রিমেক্স ফুটওয়্যার ৪৮১ কোটি ২৬ লাখ ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ ১৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করেছে। শুল্ক গোয়েন্দার তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। এ ঘটনায় ক্রিসেন্ট গ্রুপের চার পরিচালকসহ ১৩ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এরা হলেন রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিটুল জাহান মিরা, ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজের চেয়ারম্যান এম এ কাদের ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা বেগম মণি। শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর এম এ কাদেরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আজ তাকে আদালতে নেওয়া হবে। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেশ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্য এসেছে। টাকার অঙ্ক বেশি না কম সেদিকে যাচ্ছি না। তবে পাচার যে হচ্ছে, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। এ টাকা পাচার রোধে এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব রয়েছে। আরও ১০-১২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তথ্য আছে। এগুলোর অনুসন্ধান চলছে। অর্থ পাচার প্রমাণিত হলে বিএফআইইউ, দুদক ও এনবিআর একত্রে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করবে।’ পাচারকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন দেশে বিনিয়োগে অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। তার পরও বিদেশে টাকা পাচার করে লাভ কী। সবাই এ টাকা ভোগও করতে পারে না। সুইস ব্যাংকও টাকা ফেরত দেয় না- এমন খবরও বের হচ্ছে। ব্যাংকের টাকা উধাও করে, বিদেশে টাকা পাচার করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে টাকা ফেরত আনার বিষয়ে নিয়োগ দেওয়া হবে। কোন প্রক্রিয়ায় তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে তা চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে পারদর্শী কয়েকটা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। চোরাচালান প্রতিরোধে এনবিআর কঠোর অবস্থান নিয়েছে মন্তব্য করে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ভারতে বাংলাদেশের দুটি ট্রেন যাতায়াত করে। এ দুটি ট্রেনে চোরাচালানের তথ্য আছে। এগুলোয় টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অভিযান চালানো হবে। মদ-বিয়ারের চেয়েও ইয়াবার ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। সমাজের জন্য একটি বিভীষিকার নাম ইয়াবা। টেকনাফে মাদক ব্যবসার মাধ্যমে যারা সম্পদ অর্জন করেছেন তাদের তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আয়কর ও কাস্টমসকে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। তা ছাড়া আলাদা আরেকটি টাস্কফোর্সও পাঠানো হবে।

সর্বশেষ খবর