শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

চার লেন হচ্ছে এলেঙ্গা থেকে রংপুর

১৯০ কিলোমিটার সড়কে ব্যয় হবে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা

নিজামুল হক বিপুল

চার লেন হচ্ছে এলেঙ্গা থেকে রংপুর

চার লেন সড়ক। প্রতীকী ছবি

দেশের সব মহাসড়ক চার লেনে রূপান্তর করার অংশ হিসেবে এবার টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর মডার্ন মোড় পর্যন্ত চার লেন করা হচ্ছে। এরপর রংপুর থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত মহাসড়কটিও চার লেন করা হবে। ইতিমধ্যে এলেঙ্গা-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের নয়টি প্যাকেজের মধ্যে চারটির চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি পাঁচটি প্যাকেজের চুক্তি আগামী মার্চের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। চুক্তি হয়ে যাওয়া প্যাকেজের কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে। ২০২১ সালের মধ্যেই প্রকল্পের সব কাজ শেষ হবে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরকার সারা দেশের মহাসড়কগুলোকে পর্যায়ক্রমে চার লেনে উন্নীত করার অংশ হিসেবে ২০১৫ সালেই টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর শহরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই সড়কটি সাসেক করিডর, এশিয়ান হাইওয়ে, বিমসটেক করিডর এবং সার্ক হাইওয়ের অন্তর্ভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। রাজধানীর ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তরের ১৬টি জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে এই মহাসড়ক। গুরুত্ব বিবেচনায় সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয় ২০১৫ সালে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সহযোগিতা নেয়। সাসেক সড়ক যোগাযোগ প্রকল্প-২ এর আওতায় সওজ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক সম্পর্কিত নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত।

সওজ ও প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এডিবির সহযোগিতায় ১৯০ দশমিক ৪০ কিলোমিটার সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১১ হাজার ৮৯৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন হচ্ছে দুই হাজার ৫৪৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের মোট ৯টি প্যাকেজে কাজ হবে। এরমধ্যে আটটি প্যাকেজই হচ্ছে সড়ক নির্মাণের। একটি প্যাকেজে নির্মাণ হবে হাটিকুমড়োল ইন্টারসেকশন। প্রকল্পের আওতায় সড়কের আটটি প্যাকেজের মধ্যে চারটি প্যাকেজের চুক্তি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ প্যাকেজটির চুক্তি সম্পন্ন হয় গত ২৪ জানুয়ারি। এই প্যাকেজে যমুনা নদীর পশ্চিম পাড় থেকে সিরাগঞ্জের হাটিকুমড়োল পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য চীনের হেগো ও বাংলাদেশের মীর আকতার কনস্ট্রাকশন ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।  সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও সাসেক-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কাজী শাহরিয়ার হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রকল্পটির সড়ক উন্নয়নের আটটি প্যাকেজের মধ্যে চারটি প্যাকেজের কাজের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, সব প্যাকেজের কাজের চুক্তি আগামী মার্চ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তবে হাটিকুমড়োল ইন্টারসেকশনের কাজের চুক্তি সম্পন্ন হতে কিছুটা বিলম্ব হবে। তিনি জানান, ২০২১ সালের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। পরবর্তী এক বছর হবে প্রকল্পটির ডিফেক্টিভ লাইবিলিটি।  প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় মূল সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হবে। এর পাশাপাশি ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য চার লেন মহাসড়কের দুই পাশে থাকবে আরও দুটি লেন। নিরাপত্তার স্বার্থে মূল সড়কের দুই পাশে বেরিয়ার দেওয়া হবে। প্রকল্পের আওতায় থাকবে হাটিকুমড়োলে একটি ইন্টারসেকশন, এলেঙ্গা, কড্ডার মোড় ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে থাকবে তিনটি ফ্লাইওভার। ছোট-বড় সেতু থাকবে ২৬টি, রেলওয়ে ওভারপাস থাকবে একটি, কালভার্ট থাকবে ১৬১টি, আন্ডারপাস ৩৯টি এবং ফুট ওভারব্রিজ থাকবে ১১টি। এই প্রকল্পের জন্য সরকার ইতিমধ্যে ১৯৮ দশমিক ৯৪ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করেছে। 

রংপুর থেকে বুড়িমারী চার লেন : সওজ সূত্র জানায়, সাসেকের আওতায় এডিবির অর্থায়নে রংপুর থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত দুই লেনের সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করা হবে। এটি বাস্তবায়ন হবে সাসেক প্রকল্প-৩ এর আওতায়। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে ডিপিপি তৈরির কাজ। এটি সম্পন্ন হলে অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানো হবে ।

সর্বশেষ খবর