রবিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

উদ্যোগী হতে হবে জনপ্রতিনিধিদের

ড. আইনুন নিশাত

শামীম আহমেদ

উদ্যোগী হতে হবে জনপ্রতিনিধিদের

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেছেন, দেশ বাঁচাতে হলে নদী বাঁচাতে হবে। এ ব্যাপারে হাই কোর্ট একটা পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। কিন্তু আদালতের দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় নদী-খাল-জলাশয় রক্ষা করবে। তদারকি করবেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। ভূমি মন্ত্রণালয়, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে আন্তরিক না হলে নদী রক্ষা করা সম্ভব হবে না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মুঠোফোনে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. আইনুন নিশাত বলেন, নদী ও জলাশয় রক্ষার দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের ইশারায় বারবারই এ উদ্যোগ থমকে গেছে। প্রশাসন সহযোগিতা করেনি। হাই কোর্টের বিচারপতির দায়িত্বপালনকালে এ বি এম খায়রুল হক তার রায়ে নদীর সংজ্ঞা দিয়েছিলেন। কতটুকু এলাকাকে নদী বলা হবে তা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশাসন রায়কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছে। তিনি বলেন, শীতকালে নদীর ক্ষীণস্রোতকে মূল নদী ধরে স্থাপনা গড়ে ওঠার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ, বর্ষাকালে পানিতে যতটুকু কানায় কানায় পূর্ণ হবে ততটুকুই নদী। ড. নিশাত বলেন, জরিপে নদীগুলোর এলাকা নির্ধারিত আছে। কিছু নদী এদিক-ওদিক সরে গেছে। সেটারও হিসাব ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছে থাকার কথা। প্রয়োজনে বৈজ্ঞানিক ফর্মুলায় নদীর প্রশস্ততা নির্ণয় করা যায়। এক্ষেত্রে সরকারকেই নদীর সীমানা নির্ধারণ করে তা উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে হবে। ড. আইনুন নিশাত বলেন, নদী উদ্ধারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সোচ্চার। তিনি জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন সব নদী, জলাশয় দখলমুক্ত করে সেখানে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে। এটা অনেক বড় আশার কথা। এরপরও যদি নদী উদ্ধার না হয় তাহলে আর করার কিছু নেই। তিনি বলেন, নদীর মালিক ভূমি মন্ত্রণালয়। স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে নদী ও জলাশয় রক্ষার দায়িত্ব তাদের। এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। কিন্তু অনেক স্থানে নদী দখলে জনপ্রতিনিধিরাই জড়িত। উদ্ধার করতে গেলে বাধা আসে। প্রশাসন সহযোগিতা করে না। কঠোর হস্তে সরকারকেই এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। নদী রক্ষা কমিশনের কোনো প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, শুরুর পর থেকে তিন বছরে এই কমিশন তেমন কোনো কাজ করতে পারেনি। এখন যিনি দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি নদীগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন। তবে কমিশন নদীর সীমানা ঠিক করে দিতে পারে, বাস্তবায়ন করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে। প্রশাসন সহযোগিতা না করলে লাভ হবে না। নদীর পানি দূষণ রোধে পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে মন্তব্য করে এই পানি বিশেষজ্ঞ বলেন, নদী রক্ষা মানে শুধু পাড় রক্ষা নয়, পানি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষাও। আগে নদীর পানি নিশ্চিন্তে খাওয়া যেত। এখন গোসলও করা যায় না।

সর্বশেষ খবর