সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

খাদ্যে ভেজাল দেওয়াও দুর্নীতি, অভিযান চলবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

খাদ্যে ভেজাল দেওয়াও দুর্নীতি, অভিযান চলবে : প্রধানমন্ত্রী

খাদ্যে ভেজাল বন্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, খাদ্যে ভেজাল দেওয়া আমাদের দেশে কিছু শ্রেণির চরিত্রগত বদ অভ্যাস। তা ছাড়া কিছুই নয়। এটা বন্ধ করতে হবে। ভেজালবিরোধী অভিযান চলছে। তাকে আরও ব্যাপকভাবে করার জন্য আমরা আলাদাভাবে একটা কর্তৃপক্ষ করে দিয়েছি। হাটে-ঘাটে-মাঠে যেন এই ভেজালবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকে তার ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি এবং ভবিষ্যতে আরও নেব। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে গতকাল কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইতিমধ্যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আমরা সফলতা অর্জন করেছি। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। খাবারে ভেজাল দেওয়া একরকমের দুর্নীতি। কাজেই ভেজালের বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে, তাও অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, খাদ্য শুধু উৎপাদন করলেই হবে না। খাদ্যটা মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। সেই খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু ব্যবসায়ী অতি মুনাফা লাভের আশায় খাদ্যে ভেজাল মেশান যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, সঙ্গে সঙ্গে আমি মনে করি এসব ক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন করা দরকার। যে আপনি কেন ভেজাল দিয়ে বিক্রি করবেন? আপনি ভালোটাই বিক্রি করেন। আপনার যে দাম পড়ে আপনি সেই দাম নেন। একটু বেশি লাভ নিতে চান, লাভও নেন। কিন্তু মানুষকে ঠকিয়ে মানুষের জীবন ধ্বংস করার অধিকার কারও নেই। তিনি বলেন, যেসব মানুষ একেবারে হতদরিদ্র তাদের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি। বিশেষ করে দুস্থ নারীরা- তাদের আমরা বিনে পয়সায় খাদ্য দেই। এ ছাড়াও মাত্র দশ টাকা কেজিতে ৩০ কেজি চাল ৫০ লাখ মানুষ যেন কিনতে পারে সে ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি। খাদ্য উৎপাদনে কৃষকরা যেন সবসময় উদ্বুদ্ধ হন সেজন্য ভর্তুকিসহ নানা ব্যবস্থা আমরা করে থাকি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কেউ ভিক্ষা করবে না। কিছু না কিছু কাজ করে খাবে। সেই সুযোগ যেমন করে দিচ্ছি আর যারা একেবারে কিছু করতে পারে না বিনা পয়সায় আমরা খাদ্য তাদের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছি। কেউ যেন না খেয়ে কষ্ট না পায় এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে বলেন, আপনাদের এটা দেখতে হবে যে, ঘরে খাবার নেই এরকম মানুষ আছে কিনা, এরকম মানুষ থাকলে খুঁজে বের করবেন। যত টাকা লাগে দেব। তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।

সুষম খাবার খাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে বলব একগাদা ভাতই শুধু খেলে হবে না। ভাতের সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাক-সবজিও বেশি করে খেতে হবে। আর মাছ-ডিম তো আছেই। যাতে খাবারটা সুষম হয়। আর সুষম খাবার হলেই পুষ্টি নিশ্চয়তাটা থাকে। তিনি বলেন, আমাদের খাদ্যের অভ্যাসটা একটু পরিবর্তন করা দরকার। ভাতের সঙ্গে বেশি করে শাক-সবজি খেতে হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মাহফুজুল হক প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর