মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
কুমিল্লায় বাসে আগুন

খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে নৈশকোচে পেট্রলবোমা মেরে আটজন পুড়িয়ে হত্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল কুমিল্লার আদালতে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর করে চার্জ গঠনের জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. আলী আকবর। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু। তিনি বলেন, ‘কথিত আটজন হত্যা মামলায় খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাননি।  আমরা জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করব।’ মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে ২০-দলীয় জোটের অবরোধের সময় চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে একটি বাসে পেট্রলবোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে আট যাত্রী দগ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন ২০ জন। এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ৭৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় খালেদা জিয়াসহ বিএনপির শীর্ষস্থানীয় ছয় নেতাকে হুকুমের আসামি করা হয়। ৭৭ আসামির মধ্যে তিনজন মারা যান। পাঁচজনকে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। খালেদা জিয়াসহ অপর ৬৯ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফিরোজ হোসেন চার্জশিট দাখিল করেন।

খালেদার উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন

শুনানি অব্যাহত : নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দী খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে নিজের পক্ষে আংশিক শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এদিন শুনানির শুরুতেই মামলার জব্দকৃত নথি, আলমত, কেস ডকেট ও অনুসন্ধান প্রতিবেদন চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। এরপর তার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান বলেন, সার্টিফায়েড কপি পেলে যথাযথ বক্তব্য উপস্থাপন করা হবে। আর ডকুমেন্ট পর্যালোচনার সুযোগ পাব। এরপর বিচারক দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শুনতে চাইলে বিশেষ পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, মামলাটি চার্জ শুনানির পর্যায়ে আছে। ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডার মতে সার্টিফায়েড কপি দিতে হবে। ওনারা গত ১২ বছরেও দরখাস্ত করেননি। আজকে দরখাস্ত দিয়েছেন কপি প্রদানের জন্য।

এমতাবস্থায় মামলার কার্যক্রম বিলম্বিত করতে এবং ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টার জন্য কপির আবেদন করা হয়েছে। এ মুহূর্তে আবেদনযোগ্য নয়। তাই আবেদনটি নামঞ্জুর করা হোক।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক বলেন, বিধি অনুযায়ী সার্টিফায়েড কপি পাবেন। এরপর চার্জ গঠনের ওপর আংশিক শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য ১২ ফেব্র“য়ারি দিন ধার্য করেন ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। এ সময় মামলার অন্য আসামিরাও উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল বেলা ১২টা ৩৭ মিনিটে এ মামলার শুনানির জন্য আদালত বসেন। এর আগে মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়াকে কারাগারের দোতলা থেকে হুইল চেয়ারে করে আদালত কক্ষে আনা হয়। এরপর মামলার অভিযোগ গঠনের বৈধতা নিয়ে নিজের পক্ষে শুনানি করেন বিএনপি নেতা সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, আজ যারা অপরাধ করছে, তাদের বিচার হচ্ছে না, বিচার হচ্ছে আমাদের। আমরা তো শুধু চুক্তির ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছি। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ চার্জ গঠনের ওপর আংশিক শুনানি করে সময় চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। এরপর অপর আসামিদের পক্ষে আইনজীবীরা সময়ের আবেদন করলে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন। এরপর দুপুর ২টার দিকে খালেদা জিয়াকে আবারও কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আবদুর রেজাক খান, জয়নুল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলায় অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।

সর্বশেষ খবর