শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

অব্যাহত রাখতে হবে সাংবিধানিক ধারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অব্যাহত রাখতে হবে সাংবিধানিক ধারা

সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভবিষ্যতেও দেশ ও জাতির উন্নয়নে এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক স্থিতিশীলতায় সশস্ত্র বাহিনীকে ভূমিকা রেখে যেতে হবে। তিনি বলেন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সততা ও পেশাগত দক্ষতার মাধ্যমে সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্র বাহিনীর সফলতায় সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হয়েছে।

গতকাল সকালে ঢাকায় মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ‘ডিএসসিএসসি ২০১৮-২০১৯ কোর্সের’ গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ভাষণকালে এ আহ্বান জানান। কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. এনায়েত উল্লাহ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, এ বছর ডিএসসিএসসি ২০১৮-২০১৯ কোর্সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১১৮ জন অফিসার, নৌবাহিনীর ২৯ জন অফিসার, বিমান বাহিনীর ২৩ জন অফিসার ও চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লেবানন, লাইবেরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, সিয়েরা লিয়ন, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, উগান্ডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাম্বিয়া থেকে আগত ১৯টি দেশের ৪৫ জন অফিসারসহ ২১৫ জন প্রশিক্ষণার্থী অফিসার গ্র্যাজুয়েশন লাভ করছেন। সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ পর্যন্ত এ কলেজ থেকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৩ হাজার ৯০২ জন অফিসার, ৫ জন পুলিশ অফিসার এবং ৪২টি বন্ধুপ্রতিম দেশের ১ হাজার ১১১ জন বিদেশি অফিসার কোর্স সম্পন্ন করেছেন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত মন্ত্রী, এমপি, ভারপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সামছুল হক, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম এম এম আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পিএসওসহ উচ্চপদ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ‘মূর্ত প্রতীক’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী ও স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এ বিদ্যাপীঠ থেকে ‘পিএসসি’ ডিগ্রি অর্জন, যে কোনো সামরিক অফিসারের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। কলেজের সাবেক ও বর্তমান কমান্ড্যান্ট, অনুষদ সদস্যরা ও সব অফিসারকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী গ্র্যাজুয়েট অফিসারদের বলেন, কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তোমরা সমর বিজ্ঞানের ওপর উচ্চতর জ্ঞান লাভ করেছ। এ প্রশিক্ষণ অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালনে এবং যে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তোমাদের আরও আত্মপ্রত্যয়ী হতে শেখাবে। এ বছর ১১ জন নারী অফিসারের গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মহিলা অফিসারের কোর্সে অংশগ্রহণ অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। আশা করি, মহিলা অফিসারদের অংশগ্রহণ ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। শেখ হাসিনা তার নেতৃত্বাধীন সরকারের ১০ বছরের উন্নয়নের চিত্রও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’। আমাদের সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমে সন্তুষ্ট হয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ আবারও বিপুল ভোটে আমাদের নির্বাচিত করেছে। আমরা জনগণকে দেওয়া প্রতিটি ওয়াদার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত করব ইনশা আল্লাহ।

সর্বশেষ খবর