সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিউইয়র্ক যেন এক টুকরো বাংলাদেশ

তানভীর আহমেদ

নিউইয়র্ক যেন এক টুকরো বাংলাদেশ

নিউইয়র্ক সিটি। স্বপ্নের দেশ আমেরিকার না ঘুমানো এই শহর যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। উনিশ শতকের শেষের দিক থেকে বাঙালিরা যুক্তরাষ্ট্রে বসত গড়তে শুরু করেন। নব্বইয়ের পর গতি পায় আমেরিকাযাত্রা। যুক্তরাষ্ট্রে সাড়ে নয় লাখ বাংলাদেশির বেশিরভাগ বসবাস করেন নিউইয়র্কে। নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ৭৩-৭৪ স্ট্রিটে পা ফেলে বোঝার উপায় নেই এটা আমেরিকা! এখানকার দোকানপাট, অফিস সবই বাংলাদেশিদের দখলে। নিউইয়র্কের চেহারাটাই বদলে দিয়েছে বাংলাদেশিরা। শুধু জ্যাকসন হাইটস নয়, জ্যামাইকাসহ ১০টি এলাকায় দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট, গ্রোসারিশপ, মেডিকেল সেন্টার, স্কুল- সবখানেই দেখা মেলে বাংলার। বাংলা ভাষায় লেখা দোকানের নাম, বাংলাদেশিদের আনাগোনায় মুখর শহরের অলিগলি। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই বাংলাদেশি। ব্যবসা, করপোরেট অফিসেও বাংলাদেশিদের আধিপত্য। সুপারশপগুলোতে বাঙালিদের প্রিয় খাদ্য মাছ, মাংস, সবজির পসরা। রেস্টুরেন্টগুলোতেও পরিবেশন হয় বাংলাদেশি খাবার, ভর্তা-ভাজি। পিঠা উৎসবে বাংলাদেশিদের ভিড় জমে। খুব শিগগিরই নিউইয়র্কের স্কুলগুলোতে ইংরেজির পর দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে যোগ হতে যাচ্ছে বাংলা। এখানে জমে ওঠে বইমেলা, সাহিত্য সভা, বাংলা গানের কনসার্ট। বাঙালিয়ানার ছোঁয়া সবখানেই আছে, পয়লা বৈশাখ, ফাল্গুন উৎসব, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস- প্রতিটি উৎসবে নিউইয়র্কের বাঙালিরা মেতে ওঠেন আনন্দ উদযাপনে। ভাগ্য গড়তে আসা বাংলাদেশিরাও নিজ নিজ কর্ম-অভিজ্ঞতাগুণে মার্কিন প্রশাসনের অংশে পরিণত হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতেও বাড়ছে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ ও প্রভাব। নিউইয়র্ক, মিশিগানসহ বেশকিছু এলাকার ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে বাংলায়। নিউইয়র্ক নগর প্রশাসনের অধিকাংশ ওয়েবসাইটেই বাংলার সংযোজন ঘটেছে। নিউইয়র্কের অনেক বড় করপোরেশন ও নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদেও অধিষ্ঠিত হয়েছেন প্রথম প্রজন্মের অনেক বাংলাদেশি। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জন্য নিউইয়র্কে গড়ে উঠেছে একের পর এক মসজিদ। ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহে হাজার হাজার মুসল্লি জমায়েত হন। বাংলাদেশিদের কর্মচাঞ্চল্যে ও আড্ডায় নিউইয়র্ক যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর