বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সুষ্ঠু সুন্দর ডাকসু নির্বাচন হোক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুষ্ঠু সুন্দর ডাকসু নির্বাচন হোক

আখতারউজ্জামান

ডাকসুর সাবেক ভিপি ও জিএস আখতারউজ্জামান বলেছেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ঐতিহ্য ফিরে আসুক। এটি আমি চাই। তিনি বলেন, আমি আশা করি, ভাষার মাসে সংগ্রামী ঐতিহ্য ফিরে আসবে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারউজ্জামান এসব কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছরের  ইতিহাসে দুবার জিএস ও একবার ভিপি নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জনকারী এই নেতা বলেন, ডাকসুর নির্বাচনে সব সময় হলকেন্দ্রিক ভোট হয়েছে। ভোট গ্রহণ শেষে কলাভবনে সব ভোটের বাক্স এনে ভোট গণনা করা হয়েছে। সবাই অংশ নিয়েছে হলকেন্দ্রিক ভোটে। তিনি বলেন, অতীতের সব নির্বাচন ছিল অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক। দীর্ঘ সময় পর আবার ডাকসু নির্বাচন ফিরে এসেছে। এই নির্বাচনটাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে একটি অবাধ ভোট উৎসব হবে এমনটি প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে নেতা নির্বাচিত করবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অধিকার নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্দোলন করেছিলেন। ডাকসুর নেতৃত্বে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা ঘোষণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমর্থন ছিল। বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর নেতৃত্ব ছিল অসামান্য। ১৯৮২ সালে এরশাদ সামরিক আইন জারি করে ছাত্রদের এই ডাকসুসহ দেশের সব ছাত্রসংসদ নির্বাচন বন্ধ করে দেয়। আমরা আন্দোলন করে ১৯৮৯ সালে ডাকসু নির্বাচন ফিরিয়ে এনেছিলাম। ছাত্র অধিকার আদায়ের এই গৌরবময় প্রতিষ্ঠানের ফের নির্বাচন হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য একটি আনন্দের খবর, আমাদের জন্য গৌরবের। তিনি বলেন, ডাকসুর গৌরবেই বাংলাদেশের সব তারকা রাজনৈতিক নেতার জন্ম হয়েছে। এই ডাকসুই আমাকে আজকের আখতারউজ্জামান বানিয়েছে। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে এখন অনেকে নানান রকম বক্তব্য রাখছে। কোনো ধরনের অযৌক্তিক দাবি সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে আমি মনে করি। যারা বলছে, নির্বাচনের পরিবেশ নেই, তাদের দাবি স্ববিরোধী। একদিকে ডাকসু নির্বাচন করার দাবি, আরেক দিকে পরিবেশের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা স্ববিরোধী অবস্থান। তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, নিজের অর্ডিন্যান্স, নীতিমালা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট-সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা সব কিছু পরিচালনা করবেন। ডাকসু নির্বাচন সরকারি কোনো বিষয় নয়। সিনেট নির্বাচন করার জন্য কতগুলো কমিটি করে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিচালনার মাধ্যমে সব কিছু হবে। এখানে বাহির থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া সঠিক নয়। ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আগামী বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। ২০২১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শততমবার্ষিকী। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট উদযাপনের নেতৃত্ব ডাকসুর নির্বাচিত নেতৃত্ব দেবে। এটা আমাদের জন্য বিরাট তাৎপর্যপূর্ণ। সেই নির্বাচকে বাধাগ্রস্ত করার কোনো ধরনের যুক্তি নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা স্বাধীনতার চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করে। আমি মনে করি, একটি সুন্দর নির্বাচন আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের গতি ফিরিয়ে দেবে। কয়েকবার নির্বাচনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আমাদের সামগ্রিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের শূন্যতা কেটে যাবে।

সর্বশেষ খবর