ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে হলে হলে ভোট গ্রহণ করা হলে ছাত্র-ছাত্রীদের রায়ের প্রতিফলন ঘটবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ডাকসুর দুবারের ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সবাই যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে জন্য একাডেমিক ভবনে বুথ করা হোক। অনেক ছাত্র সংগঠন নানা শঙ্কা থেকেই হল বাদ দিয়ে একাডেমিক ভবনগুলোতে ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছে। দাবি মানার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তাদের কোনো আন্তরিকতা দেখা যাচ্ছে না। যদি তা না করে একতরফা ভোট করেন তাহলে বুঝব ৩০ ডিসেম্বরের আদলেই সরকার এ ভোট করছে।’
গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ফোনালাপে এসব কথা বলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন যেন প্রহসনের না হয়, সেটাই প্রত্যাশা করছি। ৩০ ডিসেম্বরের মতো ভোটের পুনরাবৃত্তি চাই না। সব ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মতামতের ভিত্তিতে ডাকসুতে একটি কার্যকর ও প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন দেখতে চাই।’
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে এটা শুভ সংবাদ। কিন্তু নির্বাচনে যেসব ছাত্র-ছাত্রী বা বিভিন্ন মতের সংগঠনগুলো অংশ নেবে তাদের মধ্যে উদ্বেগের সঞ্চার হয়েছে যে, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে কি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে ছাত্র সংগুঠনগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু কোনো পরিবেশ নেই। সরকারবিরোধী অন্য সংগঠনগুলোর কোনো দাবিই মানা হয়নি। এতে একটি বিষয় পরিষ্কার হচ্ছে, ৩০ ডিসেম্বরের মতোই একটি প্রহসনের ভোট হচ্ছে ডাকসুতে।’মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি দুবার ডাকসুর নির্বাচিত সভাপতি ছিলাম। ওই সময় ডাকসুর যে ঐতিহ্য ছিল, সেটাই দেখতে চাই। শুধুমাত্র গণঅভ্যুত্থানের জন্য নয়, ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি করা, শিক্ষাবহির্ভূত গুণাবলী তৈরি করা, ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ সর্বক্ষেত্রেই ডাকসু যেন কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে সেটাই দেখতে চাই। ভবিষ্যৎ সুনাগরিক গড়ে উঠতে পারার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ডাকসুকে দেখতে চাই। কোনোভাবেই প্রহসনের নির্বাচন চাই না। ৩০ ডিসেম্বরের মতো নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেটাই কাম্য।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে দখলদারিত্ব চলছে। ভর্তি বা সিট বাণিজ্য সবারই জানা। এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো হল সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের দখলে। তারা হলগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় বা হল কর্তৃপক্ষের কোনো কর্তৃত্ব নেই। বিপুল সংখ্যক বহিরাগত রয়েছে। এ জন্য সবাই মিলে দাবি তুলেছে, হলে যাতে ভোট কেন্দ্র না হয়। ভোট কেন্দ্র যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে হয়। এ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সবকিছু মিলে ডাকসু নির্বাচন সত্যি সত্যি কি অর্থবহ হবে সেটা দৃশ্যমান হচ্ছে না। এ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।’