বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঐক্যফ্রন্ট গণতামাশা করতে চায় : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণশুনানির নামে গণতামাশা করতে চায়। তারা যদি গণশুনানির নামে তামাশা করে তাহলে ডিএমপি কমিশনারকে বলব অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে। গতকাল রাজধানীর সড়ক ভবনে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রকৌশলী, প্রকল্প পরিচালক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের প্রকৌশলীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, রাস্তা নির্মাণ হয় কিন্তু বৃষ্টি হলে রাস্তা থাকে না। ছাল-বাকল উঠে গেলে রাস্তা করার দরকার কী। রাস্তার জন্য বড় বড় বরাদ্দ। কিন্তু কিছু দিন গেলেই নানান সংকট দেখা দেয়। কোথাও গর্ত, কোথাও ডেবে যায়, ছেঁড়া কাঁথার মতো রাস্তায় ফাটল দেখা যায়। রাস্তার কাজের মান নিশ্চিত করতে হবে। সেতুমন্ত্রী বলেন, সমালোচনা গণতন্ত্র ও সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ইতিবাচক সমালোচনা করলে গণতন্ত্রের চর্চা আরও গতিশীল হবে। সেই দিক থেকে আমরা সমালোচনা এনজয় করব। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের করা মামলায় আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাবে, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার এমন বক্তব্যের জবাবে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, মামলা করতে করতে তারা (ঐক্যফ্রন্ট) নিজেরাই পঙ্গু হয়ে যাবে। সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, অনেক ইঞ্জিনিয়ার আছেন সততার সঙ্গে দায়িত্ব নিয়ে প্রতিশ্রুতিশীলতার সঙ্গে কাজটা করেন। আবার অনেক ইঞ্জিনিয়ার দেশের কাজ হিসেবে নয় চাকরি মনে করেই করেন। আগামী রমজানের ঈদের আগেই সব ধরনের ভাঙা রাস্তা মেরামত করতে হবে। চলমান কাজ শেষ করতে হবে। মানুষ যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন। রাস্তা যেন ৩ মাসে, ৬ মাসে নষ্ট না হয়ে যায়। কাজটা দেশের কাজ। এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করার মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। প্রয়োজনে রাতেও কাজ করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, আমার নিজের জেলার বেগমগঞ্জেও একটা সড়কের কাজে ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণসামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছিল। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তেও সেটা প্রমাণিত হয়। মন্ত্রীর নিজের এলাকাতেও যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে অন্য এলাকায় কী অবস্থা হতে পারে? কাজের কোয়ালিটি খারাপ হলে দায় নিতে হবে। আজকাল ফেসবুকে লোকজন রাস্তার ছবি তোলেন। ভোগান্তির ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেন। তিনি বলেন, আমার মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে মিডিয়ায় রিপোর্ট আসে। এটা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজের অনিয়ম-দুর্নীতি হলে মন্ত্রী হিসেবে কি আমি দায় এড়াতে পারব? আমি তো আপনাদের কাছ থেকে কাজের জন্য কমিশন খাই না। প্রমোশন দিয়ে টাকা নিচ্ছি না। কাউকে বদলি করে টাকা খাওয়াও বন্ধ। কেন দায় বহন করতে হবে? সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৪ দল ভাঙা নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। শরিকদের মান-অভিমান শিগগিরই কেটে যাবে। তিনি বলেন, আমি তো শরিকদের সমালোচনাগুলো ভালোভাবে নিচ্ছি। উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী না দেওয়া প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের নেতৃত্ব তৃণমূল মানে না। বিএনপি দল থেকে মনোনয়ন না দিলেও প্রথম দফায় তাদের ২৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দ্বিতীয় দফায়ও ৩৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, এমন তথ্য আমাদের কাছে আছে।

ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্যানেল ঠিক করে দেবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ডাকসুর নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগকে একটি শর্ট লিস্ট তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া নেত্রীও (শেখ হাসিনা) আওয়ামী লীগের সিনিয়রদের নিয়ে একটি টিম গঠন করে দিয়েছেন। তারা কাজ করছেন। তাই ছাত্রলীগের প্যানেল নিয়ে আশা করি কোনো সমস্যা হবে না।

এ সময় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রওশন আরা খানমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর