বৃহস্পতিবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
বিএনপির সভায় তোপে নেতারা

বক্তব্য নয়, খালেদার মুক্তিতে কর্মসূচি দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন দলের সিনিয়র নেতারা। গতকাল বিকালে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বিএনপি  নেতাদের বক্তব্যের সময় তারা ক্ষোভ প্রকাশ ও হট্টগোল করেন। আলোচনা সভার শেষের দিকে দর্শক সারিতে বসা বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে কথা শুনতে চান। ‘বক্তব্য বন্ধ করুন, খালেদার মুক্তির কর্মসূচি দিন’ বলে তারা  স্লোগান দিতে থাকেন। মহান ‘একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে গতকাল বিকালে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভা ছিল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমের পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস  চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তার বক্তব্য চলাকালে দর্শক সারি থেকে এক  নেতা উচ্চস্বরে বলে ওঠেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলেন, কবে এবং কীভাবে মুক্তি পাবেন? আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করুন। আজকে হলরুম খালি কেন?’ প্রথম অবস্থায় মওদুদ আহমদ শুনতে পাননি। পরে তিনি জানতে চাইলে দর্শক সারি থেকে আবারও একই কথা জানতে চাওয়া হয়। এ সময় অনেকেই খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে  স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আন্দোলন হবে, অবশ্যই হবে। একটু ধৈর্য ধরতে হবে’। পরিস্থিতি শান্ত হলে তিনি বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। একমাত্র পথ হচ্ছে আন্দোলন। সে জন্যই আমাদের সুপরিকল্পিত আন্দোলন করতে হবে। সেভাবেই আমাদের কর্মসূচি নিতে হবে। এখন আমাদের একমাত্র এজেন্ডা হবে খালেদা জিয়ার মুক্তি।’ এরপর সভাপতির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর বক্তব্যের এক পর্যায়ে আবার দর্শক সারি থেকে আওয়াজ আসে, ‘বিএনপির কমিটি ভেঙে দিন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের কর্মসূচি দিন। আজ হল খালি কেন? জবাব চাই।’ এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, কর্মসূচি আসবে। ধৈর্য ধরতে হবে। দাঁড়ান, হলে বসে চিৎকার করলে হবে না। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনারা  কেন ভাবছেন, ব্যর্থ হয়েছেন। আপনারা ব্যর্থ হননি। আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন কায়েম করতে ১০ বছর ধরে নির্যাতন চালাচ্ছে। একুশের চেতনা ধারণ করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সেই লড়াইয়ে আমরা বিজয়ী হবোই। তিনি বলেন, আপনারা নিজেকে দুর্বল ভাবেন কেন? মনোবল হারাবেন না।

দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কখনো মনোবল হারাতে বলেননি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি এত বড় একটি রাজনৈতিক দল, সারা দেশে সংগঠন আছে, কর্মী-সমর্থক আছে তবু কেন আমাদের নেত্রীর মুক্তি হচ্ছে না? আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামি ও আন্দোলন করতে পারি তাহলে অবশ্যই খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে।

সর্বশেষ খবর