সোমবার, ৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
আদালতে খালেদার সঙ্গে ফখরুলের সাক্ষাৎ

আগের দিন রেডি ছিলাম, ইচ্ছা করেই তারা আনেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগের দিন রেডি ছিলাম, ইচ্ছা করেই তারা আনেনি

নাইকো দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে এসে খালেদা জিয়া বললেন, ‘আগের তারিখে আমি প্রস্তুত ছিলাম, আমাকে আদালতে আনা হয়নি।

অথচ বলা হয়েছে আমি ইচ্ছা করে আদালতে আসিনি। সেটা ঠিক না।’ গতকাল রাজধানীর পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে ঢাকার নয় নম্বর বিশেষ জজ বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে কারা কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন শুনানি চলাকালে পুরো সময় খালেদা জিয়ার পাশের চেয়ারে বসে তার সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল

ইসলাম  আলমগীর। কোনো রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি বলে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের জানান তিনি। এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৯ মার্চ দিন ঠিক করেন বিচারক। দুপুর সাড়ে ১২টায় হুইল চেয়ারে করে আদালতে আনা হয় খালেদা জিয়াকে। খালেদা জিয়া আদালতে প্রবেশের সময় মির্জা ফখরুল তার শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে ভালো নেই বলে জানান। বলেন, শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। ১২টা ৩৫ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এ সময় মামলার আসামি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলামের পক্ষে তার আইনজীবী আসাদুজ্জামান শুনানি করেন। তারপর সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের পক্ষে তার আইনজীবী শুনানি করেন। তারা দুজন শুনানি শেষে বলেন, মামলাটি চলতে পারে না।

এরপর মামলার আসামি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ আইনি পয়েন্টে তিনটি যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, মামলায় আমার বিষয়ে কোনো কিছু নেই। নেই কোনো দলিল, সাক্ষী বা কোনো কাগজ। আমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে শুধু মতামত দিয়েছি, যা সব সরকারের আমলে দেওয়া হয়। খালেদা জিয়াও নিয়ম অনুযায়ী স্বাক্ষর দিয়েছেন। আগের প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি সচিবও এ কাজ করেছেন, যা চার্জশিট দেখে প্রতীয়মান হয়। খালেদা জিয়াসহ সব আসামির অব্যাহতি চাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল যা বললেন : প্রায় এক ঘণ্টা শুনানি শেষে বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে হুইল চেয়ারে খালেদা জিয়াকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। দেখা যায়, নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে প্রবেশের প্রধান ফটক পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যান। খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, কথাও হয়েছে। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা চিন্তিত। চিকিৎসকদের কাছ থেকে যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া। এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার রক্ত নেওয়া হয়নি। তিনি ডায়াবেটিস রোগী। এ ব্যাপারেও যথাযথ চিকিৎসা তিনি পাচ্ছেন না।’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে কী আলাপ হলো- এমন প্রশ্নে কোনো রাজনৈতিক আলাপ হয়নি দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না। সরকার দুরভিসন্ধি করে জামিন দিচ্ছে না। মামলা সূত্রে জানা গেছে, কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করেন। মামলা করার পরের বছর ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

সর্বশেষ খবর