মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
মতবিনিময়ে দুদক চেয়ারম্যান

সিংহভাগ অর্থ পাচার ওভার ইনভয়েসিংয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, হুন্ডির মাধ্যমে নয়, দেশের সিংহভাগ অর্থ পাচার হয় ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং চ্যানেলে। এনবিআরের কাছে ওভার ইনভয়েসিংয়ের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তা পেলে প্রয়োজনে তালিকা ধরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, লাখো কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। হুন্ডির মাধ্যমে কখনো লাখো কোটি টাকা পাচার হয়নি। দুদক তদন্ত করে দেখেছে, টাকা পাচার হয়েছে শুধু ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে। আমি সরকারকে বলতে চাই, এনবিআরকে বলতে চাই, অর্থ মন্ত্রণালয়কে বলতে চাই- আপনারা যাদের বিরুদ্ধে ফাইল করেছেন তারাই আমার কাছে মূলত পাচারকারী। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের কৌশলপত্র-২০১৯ নিয়ে সম্পাদকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় চুনোপুঁটি নয়, রাঘববোয়ালদের ধরতে দুদকের প্রতি আহ্বান জানান বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকরা। তারা বলেন, সুইপার থেকে রাঘববোয়াল পর্যন্ত সকল পর্যায়ে দুদকের নজরদারি থাকতে হবে। বড়দের ধরতে না পারলে ছোট মশা-মাছি ধরে দুদকের ভাবমূর্তির বড় কোনো পরিবর্তন হবে না। ইকবাল মাহমুদ বলেন, মাইন্ড সেট চেঞ্জ না হলে দুর্নীতি দমন বা বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা সম্মিলিতভাবে সরকার, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন মিলে যদি এক নৌকায় না উঠি তাহলে এই সমুদ্র পাড়ি দেওয়া অসম্ভব। টিআইবি শুধু সমালোচনা করে। কিন্তু নির্দিষ্ট করে বলতে পারে না। তারা যেভাবে বলে সেটা সবাই পারে। আমরা নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর অভিযোগ চাই। সমালোচনা করবেন কিন্তু নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর করবেন না তা হবে না। জাহালমের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমরা যখন জাহালমের বিষয়টি জানতে পারলাম সঙ্গে সঙ্গে চারটি মামলায় জামিন করিয়েছি। আমরা তো ছাড়তে পারি না। কারণ ছাড়ার মালিক তো আদালত। আর বাকি ২২টি মামলার কার্যক্রম চলছিল। অন্যদিকে, জাহালমের বিষয়টি আসলে কী তা জানতে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটি আরও ১০ দিন বেশি সময় চেয়েছে। আশা করছি, ২০-২২ তারিখে আমরা তদন্ত রিপোর্ট পেয়ে যাব। তবে এটা সত্য, জাহালমের কেস নিয়ে পাবলিকলি আমাদের ট্রাস্টের পরিমাণ কমে গেছে। এমনকি গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে এমন কোনো কেস হয়নি। এটা আসলে দুঃখজনক।

ইটিভির প্রধান নির্বাহী মনজুরুল আহসান বুলবুলের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, জিটিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল, দীপ্ত টিভির এমডি জাহিদুল হাসান, বিটিভির মহাপরিচালক হারুনর রশীদ প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর