শিরোনাম
বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভুয়া রপ্তানি দেখিয়ে বন্ডের নামে রাজস্ব ডাকাতি

ট্রাকে ট্রাকে শুল্ক ফাঁকির পণ্য যাচ্ছে কালোবাজারে, ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় শিল্প, দেড় মাসে ২৬ ঝটিকা অভিযান, প্রায় ৩০ কোটি টাকার অনিয়ম ধরেছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট

রুহুল আমিন রাসেল

ভুয়া রপ্তানি দেখিয়ে বন্ডের নামে রাজস্ব ডাকাতি

ভুয়া রপ্তানি দেখিয়ে বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধার আড়ালে রাজস্ব ডাকাতির তথ্য মিলেছে। সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিদিন গভীর রাতে ট্রাকে ট্রাকে খালাস হয় কাপড়, প্লাস্টিক ও কাগজ জাতীয় বিভিন্ন পণ্য। চোরাকারবারিরা এসব পণ্য বিক্রি করছে কালোবাজারে। রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি হওয়া পণ্যের অবৈধ বাণিজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় শিল্প খাত। এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

বন্ড সুবিধার পণ্য কালোবাজারে বিক্রি এবং চোরাকারবারি ঠেকাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়ার নির্দেশনার আলোকে গত দেড় মাসে ২৬ ঝটিকা অভিযান চালিয়েছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট। সংস্থাটি জানিয়েছে, এসব অভিযানে ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ৩০ কোটি টাকার অনিয়ম উদ্ঘাটন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, যেসব রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক ও নির্বাচিত স্থানীয় শিল্প খাতে শুল্কমুক্ত সুবিধায় যারা কাঁচামাল আমদানি করে পণ্য তৈরি ও তা রপ্তানি করেন, তাদেরকে সরকার বন্ড সুবিধা দেয়। ২০০০ সাল থেকে তৈরি পোশাক ও স্থানীয় শিল্প কূটনৈতিক বন্ডের আওতায় এ সুবিধা দেওয়া হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, গত কয়েক দিনের গভীর রাতেই ট্রাকে ট্রাকে কাপড় ও কাগজ জাতীয় পণ্যসামগ্রী বোঝাই ট্রাক খালাস হয় রাজধানীর ইসলামপুর, নয়াবাজার, চকবাজার মোড়, সাভার ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে। নিয়মানুযায়ী রপ্তানির শর্তে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি হওয়া পণ্যসামগ্রী খালাস হওয়ার কথা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়্যারহাউসে। কিন্তু চোরাকারবারিতে জড়িত সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ী চক্র সে পণ্য বিক্রি করছে কালোবাজারে। এর মধ্যে বটম গ্যালারি, ট্রাউজার ওয়ার্ল্ডসহ ৭টি প্রতিষ্ঠান প্রায় রাতে কালোবাজারে বিক্রি করছে। সম্প্রতি গভীর রাতের এক অভিযানে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য বোঝাই ট্রাক হাতেনাতে আটক করেছেন ঢাকা কাস্টমস বন্ডের কর্মকর্তারা।

বন্ডের অনিয়ম বন্ধে তিনটি সুপারিশ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্ডেড ওয়্যারহাউস ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয় বা অটোমেশন না হওয়ায় দেশীয় শিল্প হুমকির মুখে পড়ছে। একশ্রেণির ব্যবসায়ী ও কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারী বন্ডের অব্যবস্থাপনা ও অস্বচ্ছতার সুযোগ নিচ্ছেন। এতে বন্ডের কার্যক্রমকে শুধু প্রশ্নবিদ্ধ নয়, বরং রাজস্ব ফাঁকি ও দেশীয় শিল্পকে হুমকির সম্মুখীন করছেন। বন্ডেড ওয়্যারহাউস ব্যবসায় প্রতি বছর ৩০ হাজার কোটি টাকার সুবিধা দেয় সরকার।

সূত্র জনায়, বন্ড লাইসেন্সধারী বেশকিছু প্রতিষ্ঠান চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণে পণ্য আমদানি করে। সে পণ্য কালোবাজারে বিক্রি করে কয়েক শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ী চক্র। সৈয়দপুর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) ফারদিন এক্সেসরিস ও কোয়েস্ট নামের দুটি প্রতিষ্ঠান অস্বাভাবিকভাবে পণ্য আমদানি করে কালোবাজারে বিক্রি করেছে। এর মধ্যে কোয়েস্টই প্রায় ১৫ লাখ কেজি বিওপিপি ফিল্ম আমদানি করে, যার একটি বড় অংশ কালোবাজারে বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফারদিন এক্সেসরিজ ৫ লাখ ২ হাজার কেজি বিওপিপি ফিল্ম আমদানি করে, যা ব্যবহার করার মতো উন্নত প্রযুক্তি নীলফামারী ইপিজেডে নেই। ফারদিন এক্সেসরিজসহ অনেক প্রতিষ্ঠান প্রতিদিনই গভীর রাতে ট্রাকে ট্রাকে বন্ডের পণ্য খালাস করে।

আদমজী ইপিজেডের প্রতিষ্ঠান চেক পয়েন্ট সিস্টেম বিডি লিমিটেড বন্ডে লাইসেন্সে পণ্য আমদানির অনুমোদন রয়েছে অস্বাভাবিকভাবে। প্রতিষ্ঠানটির চলতি অর্থবছরে ৩৩ হাজার টন পণ্য আমদানির অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু এত বিপুল পরিমাণে পণ্যের উৎপাদন ক্ষমতা তাদের নেই। অথচ চেক পয়েন্ট সিস্টেম বিডি লিমিটেড পেপার অ্যান্ড পেপার বোর্ড, সেলফ এডিসিড পেপার, ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি লেভেল, ওভেন লেভেলস, রিবন, ফাস্ট্রনার, স্ট্রিংসহ বিভিন্ন জাতীয় পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করেছে। সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটির আমদানি ও রপ্তানি অস্বাভাবিক হওয়ায় মোট প্রাপ্যতা ৩৩ হাজার টন থেকে যুক্তিসংগতভাবে কমিয়ে আনার আইনি প্রক্রিয়া চলছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের ওয়েবকোয়াট নামের প্রতিষ্ঠানে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঝটিকা অভিযান চালায় ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের উপকমিশনার নাজিউর রহমানের নেতৃত্বধীন একটি দল। অভিযানে রিলিস পেপার, সেলফ পেপার, প্রিন্ট ইনক, টিস্যু পেপার, হট মেইল্ড গ্লু, কোটেড পেপার, ক্রাফট পেপার, অফসেট পেপার ইত্যাদি কাঁচামাল কালোবাজারে বিক্রিসহ কোটি কোটি টাকার অনিয়ম থাকার মামলা চলমান রয়েছে।

জানা গেছে, বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধার অপব্যবহার ও চুরির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ইপিজেডগুলোর কর্মকর্তারা। আর কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ী শুল্ক দিয়ে সামান্য পণ্য আমদানি করেন, বাকি পণ্য বন্ড থেকে অপসারিত পণ্যের সঙ্গে মিলিয়ে এক ভ্যাট চালানের রসিদ ব্যবহার করেন। এসব অনিয়ম ও চোরাচালান ঠেকাতে সক্রিয় উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। ইতিমধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান শুল্ক গোয়েন্দা, বন্ড কমিশনারেটসহ সব কাস্টমস কমিশনারকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সে নির্দেশনার আলোকে সর্বশক্তি দিয়ে অভিযান পরিচালনা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম খতিয়ে দেখছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার এস এম হুমায়ন কবির গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বন্ডের অপব্যবহার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি। তথাকথিত রপ্তানি খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। অবৈধ বাজারে সার্বক্ষণিক নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।

বন্ডের শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে একমত পোষণ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সহিদুল ইসলাম গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকার রপ্তানি উৎসাহিত করছে। একই সঙ্গে দেশীয় শিল্প খাতের উন্নয়ন ও সুরক্ষার বিষয়টিও অগ্রাধিকার রয়েছে। তাই বন্ড সুবিধার অপব্যবহার বন্ধে আমাদের সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে বন্ড সুবিধার অপব্যবহারে দেশের টেক্সটাইল শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। সংস্থাটির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বিগত এক বছর বা তারও বেশি সময় যাবৎ স্থানীয় চাহিদা পূরণের জন্য যেসব মিল সুতা ও কাপড় তৈরি করে, সে মিলগুলো তাদের পণ্য বাজারজাতকরণে ব্যর্থ হচ্ছে। শুল্ক ও করমুক্ত এবং মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানি হওয়া সুতা-কাপড়সহ বিভিন্ন ড্রেস ম্যাটেরিয়ালের স্থানীয় বাজারে ব্যাপক ও অবাধ বিক্রি হচ্ছে। এর প্রভাব দেশের রপ্তানিমুখী স্পিনিং ও উইভিং মিলগুলোতেও পড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, কাস্টমস বন্ড ও কাস্টমস হাউসগুলো এ ধরনের অনৈতিক কর্মকা  বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা এখনো অব্যাহত আছে। দেশের টেক্সটাইল মিলগুলো বর্তমানে শ্রমিক-কর্মচারীর বেতন, মজুরি ও অন্যান্য ইউটিলিটি ব্যয় নির্বাহের জন্য উৎপাদন খরচ অপেক্ষা নিম্ন মূল্যে সুতা ও কাপড় বিক্রি করছে।

এ প্রসঙ্গে বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রায় ২০টির মতো প্রতিষ্ঠান আমদানি করা সুতা ও কাপড় দেশের বিভিন্ন মোকামে বাজারজাতকরণে জড়িত রয়েছে। এ ছাড়া অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলো কার্যত বন্ধ কিন্তু তাদের বন্ড লাইসেন্সগুলো বিভিন্ন পন্থায় কার্যকর রেখে সুবিধা গ্রহণ করছে। আমরা মনে করি বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা চিহ্নিত এবং তাদের মধ্যে কতটি চালু রয়েছে তা নির্ধারণ করে বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর বন্ড লাইসেন্স বাতিল করা দরকার। বন্ধ কারখানার বন্ড লাইসেন্স ব্যবহারের অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ হলে দেশীয় শিল্প সুরক্ষা পাবে।

ইপিজেড ও কাস্টমস সূত্র জানায়, সম্প্রতি মোংলা ইপিজেডের মুন স্টার, সৈয়দপুর ইপিজেডের ফারদিন এক্সেসরিজ ও কোয়েস্ট এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের ওয়েবকোয়াট নামের চারটি বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান বন্ড সুবিধায় শুল্কমুক্ত কাগজ জাতীয় পণ্য রাজধানীর নয়াবাজারে কয়েক দফা বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর আগেই এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে। কিন্তু কোনো প্রকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় পুনরায় চোরাকারবারিতে জড়িয়ে পড়েছে ওই চার প্রতিষ্ঠান।

জানা গেছে, মোংলা ইপিজেডের প্রতিষ্ঠান মুন স্টারের মালিক অত্যন্ত প্রতাপশালী। তার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নামে কয়েকটি মামলা করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। তবু থামেনি চোরাচালান। সম্প্রতি মুন স্টার কাগজের একটি বড় চালান কালোবাজারে বিক্রি করেছে বলে নিশ্চিত করেছে মোংলা ইপিজেড।

সৈয়দপুর ইপিজেডের ফারদিন এক্সেসরিজ ও কোয়েস্টের শুল্কমুক্ত পণ্য কালোবাজারে বিক্রির সঙ্গে ইপিজেড কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন সৈয়দপুর ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আকতার আলম মুসতারি। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অনুমোদন ছাড়া কোনোভাবেই শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি পণ্য কেউ খোলাবাজারে বিক্রি করতে পারে না।

এর আগে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার কাছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-১২ মোহাম্মদ মমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিশেষ প্রতিবেদন গত বছর ২৬ জুলাই পাঠানো হয়। প্রতিবেদনে দেশীয় শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে বলা হয়- বন্ড কার্যক্রম স্থানীয় শিল্প বিকাশের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। সরকার এ লক্ষ্যে বন্ডেড ওয়্যারহাউসের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়ে থাকে। স্থানীয় বাজারে অবৈধভাবে শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের মাধ্যমে অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হচ্ছে, যা স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে হুমকির সম্মুখীন এবং বেসরকারি রাজস্বের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি করছে। ম্যানুয়াল কার্যক্রমে অদক্ষতার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখা কঠিন হবে। এতে রপ্তানিমুখী ব্যবসার খরচ ক্রমাগত বাড়বে। কিন্তু বন্ডের কাঁচামালের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে রপ্তানি প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে। স্থানীয় বাজারে অবৈধভাবে শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশ বন্ধ করা সম্ভব হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশীয় রপ্তানিমুখী শিল্পকে সুবিধা দেওয়া ও ব্যবসার প্রসার ঘটাতে বন্ডেড ওয়্যারহাউসের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার সুবিধা দেয় সরকার। কিন্তু বন্ডের বিদ্যমান সামগ্রিক ম্যানুয়াল ব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই। অনুমোদন ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ নথি চালাচালির কারণে দলিলাদি হারিয়ে যাচ্ছে ও চুরি হচ্ছে। কাস্টমস কর্মচারীদের মাধ্যমে সহজেই তথ্য আড়ালসহ অনিয়মের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) জারি করা ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন বা ইউডি যথাযথভাবে তদারকি না থাকায় বন্ড সুবিধার অপব্যবহার বাড়ছে। নিয়মতান্ত্রিক হিসাব রাখা হয় না, বরং স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়। প্রতিদিনের নথি ব্যবস্থাপনায়ও আছে জটিলতা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়- বন্ডে সঠিক জবাবদিহিতা ও ব্যবস্থাগত পদ্ধতির অভাবে নিরীক্ষা কাজের বিশ্বাসযোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে- ব্যাংক ও অন্যান্য সুফলভোগীর কাছ থেকে তথ্য পেতে প্রচুর সময়ের অপচয় হওয়া। দৈনন্দিন কার্যক্রমে বন্ড লাইসেন্স নবায়ন, নিরীক্ষা, আন্তবন্ড স্থানান্তর ইত্যাদিতে কালবিলম্ব ও দ্বৈততা।

সর্বশেষ খবর