বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
খনি দুর্নীতি মামলা

আদালতে যাননি খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

বড়পকুরিয়া কয়লাখনিসংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে আসতে চাননি। কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে এই তথ্য জানিয়েছে। এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ, যা সবাই জানেন। এ জন্য হয়তো আদালতে আসেননি।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করলে আগামী ৯ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে আদালত। পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২-এ গতকাল এ মামলার শুনানি হয়। এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার জন্য নির্দেশ দেয় আদালত। সেদিনই খালেদা জিয়াকে হাজির করার পরোয়ানা জারি করা হয়। দুর্নীতির পৃথক মামলায় দি ত খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে রাখা হয়েছে। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি এখানে অবস্থান করছেন। শুনানির শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, ‘আমরা মামলার অনেক কাগজপত্র হাতে পাইনি। কাগজপত্র ছাড়া কীভাবে শুনানি করব?’ মামলার অপর আসামি বিএনপি নেতা আমিনুল হক আদালতে হাজির হননি। তার আইনজীবী আদালতকে জানান, আমিনুল হক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য এখন সিঙ্গাপুরে আছেন। মামলার আসামি বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী আদালতে হাজির ছিলেন। অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য সময় চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। আগে দল গোছানো পরে খালেদা মুক্তির আন্দোলন : বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আগে দল গোছানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গতকাল সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে স্কাইপিতে যোগ দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দলের একাধিক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বিএনপি এখন ঐক্যফ্রন্টমুখী দলে পরিণত হয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এখন আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে রাজপথে আন্দোলনে যেতে হবে। এর আগে দল ও অঙ্গ সংগঠনগুলো গুছিয়ে ফেলতে হবে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০-দলীয় জোট, ডাকসু ভোটসহ আগামী দিনে করণীয় নিয়ে নেতারা কথা বলেন। তারেক রহমান স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বক্তব্য শোনেন।

তবে তিনি অল্প কথা বলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া বৈঠকে অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার  মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে.  জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বৈঠকে স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার সমালোচনা করে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল নাকি ভুল ছিল, তা ইতিহাস একদিন তুলে ধরবে। এখন ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতিকে বন্ধ করে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। দলকে  গোছাতে হবে। সারা দেশে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়াতে হবে বলেও তিনি মনে করেন।

আরেক নেতা জামায়াত প্রসঙ্গে বলেন, খালেদা জিয়া জামায়াতের সঙ্গে জোট করেছেন। তাই তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আরেক নেতা বলেন, জামায়াত বিএনপির একটি বোঝা। তারা সরে যাবে কি- তাদেরই সরিয়ে দেওয়া উচিত। আরেক নেতা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে নিয়মিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও এখন আর তা হচ্ছে না। ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হচ্ছে। তার ওই বক্তব্যের পর সপ্তাহে অন্তত একবার স্থায়ী কমিটির বৈঠক করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। শেষ দিকে তারেক রহমান দলের কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন  পেশাজীবীদের সঙ্গেও সম্পর্ক জোরদারের তাগিদ দেন।

সর্বশেষ খবর