শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

আবরারের মৃত্যু দেখিয়েছে আমরা ট্রাফিক শৃঙ্খলায় ব্যর্থ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আবরারের মৃত্যু দেখিয়েছে আমরা ট্রাফিক শৃঙ্খলায় ব্যর্থ

আছাদুজ্জামান মিয়া

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। বারবার বলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ট্রাফিক ব্যবস্থার জন্য এখন আইনের কঠোর প্রয়োগে যেতে হবে। কোনো পথচারী দুর্ঘটনার কারণ হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কমিশনার বলেন, জেব্রা ক্রসিং হলো সেফজোন। কিন্তু সেই জেব্রা ক্রসিংয়েই প্রাণ দিতে হলো মেধাবী শিক্ষার্থী আবরারকে। আবরারের মৃত্যু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, ঢাকা শহরের পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাই দায়ী। গণপরিবহনে  শৃঙ্খলা ফেরানোর এখন চূড়ান্ত সময়। প্রতিযোগিতা করে বাস চালালে বা রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে ট্রাফিক শৃঙ্খলা ও সচেতনতা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা তিনটি বিষয় ক্লিয়ার রাখতে চাই। ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় বাস আর ঢাকা শহরে চলতে দেব না। নির্ধারিত বাস স্টপেজের বাইরে বাস দাঁড়াতে পারবে না। এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজ পর্যন্ত দরজা বন্ধ রাখতে হবে। জেব্রা ক্রসিংয়ের আগে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রীসাধারণ ও পথচারীকে নিরাপদে রাস্তা পার হতে দিন। ডিএমপি প্রধান বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশকেও দায় দিচ্ছি। আবার পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু যেসব যাত্রী জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করছেন না, ফুটপাথ ব্যবহার না করে রাস্তায় হাঁটেন কিংবা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, কানে এয়ারফোন দিয়ে, মোবাইলফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন, তাদেরকেও দায়ী করতে হবে। বাস যেমন জব্দ করেন, তেমনি দুর্ঘটনার কারণ হলে পথচারীকেও আটক করুন। মিডিয়াকে দেখান। তারা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে, জেব্রা ক্রসিং ছাড়া রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে।

মালিক-শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, চুক্তিভিত্তিক কাজ বন্ধ করুন। বেতনভিত্তিক মজুরি চালু করেন। বাসের রুট ঠিক রাখুন। ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষণ নিন। ডিএমপি কমিশনার বলেন, আবরারকে চাপা দেওয়া সুপ্রভাত বাসটির রুট পারমিট ছিল না। ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রুটের পারমিট ছিল ওই বাসটির। শুধু তাই নয়, ওই বাসের বিরুদ্ধে ২৭টি মামলাও ছিল। আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সড়ক অবরোধ করে কোটি কোটি মানুষের দুর্ভোগ তৈরি করবেন না। আপনারা ক্লাসে ফিরে যান। আমাদের কাজে সহযোগিতা করুন। অনুষ্ঠানে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মীর রেজাউল আলম বিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণ পদ রায় বিপিএম, পিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ পিপিএম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন আহমদসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, সায়েদাবাদ বাস মালিক সমিতিসহ পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর