অর্থনীতিবিদ ও সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেছেন, দেশের চলমান সংকটে সরকারের আত্মবিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে। আত্মবিশ্লেষণ করে ঠিক করতে হবে কী কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হলো। ‘বাংলাদেশ বিরাজমান সংকট : উত্তরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ সভার আয়োজন করে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ। ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, সরকারের কোনো কথায় ভুল ছিল কিনা সেটা নিয়ে বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন আছে। আর কোনো অবস্থায় এ প্রক্রিয়া প্রশাসনের বল প্রয়োগের ভিত্তিতে হলে হবে না। কারণ বল প্রয়োগের প্রক্রিয়া জাতিকে এক করতে পারে না। এখানে বল প্রয়োগের মাধ্যমে কোনো সুষ্ঠু সমাধান হবে না। তিনি বলেন, স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষ আছে যাদের সংকটের সময় পাওয়া যায় না। যা আমরা এখন দেখছি। ছাত্র সমাজ যৌক্তিক দাবির জন্য যে আন্দোলন করছিল তা তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বহু প্রাণহানি হয়েছে। যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা থাকবে। সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সভাপতি বলেন, দেশে বর্তমানে বহু সংকট চলছে। এর মধ্যে অর্থনৈতিক সংকট, সামাজিক সংকট এবং রাজনৈতিক সংকট আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা সংকট আছে। প্রশাসনের যেভাবে কাজ করার কথা সেভাবে হচ্ছে না।
যখন কাউকে কাস্টডিতে নিয়ে কোনো বক্তব্য নেওয়া হয় তখন স্বাভাবিকভাবে সেটা গ্রহণযোগ্য হয় না। কিন্তু তার পরও সেটা করা হয়। এগুলো তামাশা বাদে আর কিছু নয়। তিনি বলেন, এর পর আছে দর্শনগত সংকট। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসহ আমাদের যে চারটি স্তম্ভ আছে সেগুলো এখন সংকটে আছে। যে ঘটনা বাংলাদেশে হয়েছে সেটা হচ্ছে আক্রমণ বাংলাদেশ, আক্রমণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনা আছে, আমাদের গণতন্ত্রের চেতনা আছে, সমাজতান্ত্রিক চেতনা আছে। মোট কথা আমরা দর্শনগত সংকটে আছি। ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা সাধারণের সহযাত্রী হতে পারছি না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদের সবাইকে সহযাত্রী হতে হবে। আমাদের সঠিক তথ্যপ্রবাহের সংকট আছে। মানুষের কাছে এত বেশি ভুল তথ্য যাচ্ছে যার কারণে আমরা সঠিক তথ্য পাচ্ছি না। তিনি বলেন, আরেকটি হচ্ছে অস্তিত্বের সংকট। আমরা যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়েছিলাম সেটি এখন সংকটে আছে। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে সার্বিকভাবে আস্থা তৈরি করতে হবে। আর এটা করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে তাদের সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আর সেখানে নেতৃত্ব দিতে হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সভাপতি এম এ হামিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক মহাপরিচালক ম. হামিদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহউপাচার্য রশিদ ই মাহবুব, ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান প্রমুখ।