ভয়াবহ বন্যার কারণে এখনো দেশের বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে তলিয়ে আছে। ফলে প্রায় সোয়া ৯ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের বন্যায় গতকাল বিকাল পর্যন্ত ৯ লাখ ২৪ হাজার ২৬৬ জন গ্রাহক বিদ্যুৎহীন আছেন। বন্যায় চাঁদপুর-১, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা-২, কুমিল্লা-৪, চট্টগ্রাম-২, চট্টগ্রাম-৩, কক্সবাজার, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিদ্যুতের লাইন ও উপকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত এসব এলাকার ১৭টি উপকেন্দ্রসহ ১৬০টি ১১ কেভি ফিডার বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, এবারের ভয়াবহ বন্যায় ফেনীতে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎহীন আছে। ফেনীর ১৭টি উপকেন্দ্র এখনো বন্ধ আছে। এ জেলায় ১০৬টি ১১ কেভি ফিডার বন্ধ। এতে ফেনী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৬ জন গ্রাহকের মধ্যে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৪৬ জন গ্রাহকের বিদ্যুৎ নেই। এ ছাড়া চাঁদপুর-১ সমিতির ৫০০ জন গ্রাহক বিদ্যুৎহীন। নোয়াখালীতে ১১ কেভি ফিডারের ১৪টি কেভি ফিডার বন্ধ। এ জেলায় ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪০০ গ্রাহকের মধ্যে ২ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ জন গ্রাহকের বিদ্যুৎ নেই। লক্ষ্মীপুরে ২৫ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন। কুমিল্লা-২ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিতে ২৩টি ১১ কেভি ফিডার বন্ধ। ফলে ১ লাখ ৩২ হাজার ৮০ জন গ্রাহক বিদ্যুৎহীন। কুমিল্লা-৪ সমিতিতে ২০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন। চট্টগ্রাম-২ সমিতির ৮ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন। চট্টগ্রাম-৩ এলাকায় ১৬টি ১১ কেভি ফিডার বন্ধ। ফলে ৭০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন। কক্সবাজারে ১৪০ জন গ্রাহক, মৌলভীবাজারের ৫ হাজার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাড়ে ৩ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন আছেন।
দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে : বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুতগতিতে বিদ্যুৎ লাইন চালু করা হবে।
গতকাল সকালে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়ায় ৩৫ মেগাওয়াটের স্পেকটা সোলার পাওয়ার প্লান্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিগত সময়গুলোয় অনিয়ম হয়েছে। ২০১০ সালে আইন করার মাধ্যমে কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই প্রকল্প নেওয়া হতো। এর মধ্য দিয়ে খাতিরের লোকদের প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানো হতো। উদ্দেশ্য ছিল অনিয়মের মাধ্যমে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে নানা অজুহাতে গ্রাহকের কাছে বেশি দামে বিক্রি করা। এ সময় মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার, স্পেকটা সোলার পাওয়ার প্লান্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আফতাব উদ্দিন খান বাচ্চু, মানিকগঞ্জ পাওয়ার গ্রিডের নির্বাহী প্রকোশলী গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ, শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।