ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। গতকাল সচিবালয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরের এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমাদের এই স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে, সর্বস্তরের জনগণকে আমরা সঙ্গে পেয়েছি। এ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রতি আমাদের কিছু কমিটমেন্ট তৈরি হয়েছে। আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। পাশাপাশি গণ অভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রেখে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার, আন্দোলনে আহত-নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন ও দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা দেওয়া এবং আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকান্ডে জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই জাতিসংঘের অধীনে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানুক আন্দোলনের এই সময়ে বাংলাদেশে কী কী ঘটেছে, আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার প্রতি কতটা নৃশংস ছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। রোরি মুঙ্গোভেন অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিশেষ করে তরুণেরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন, তাতে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার অনুপ্রাণিত হয়েছেন। এ ঘটনাটিকে বাংলাদেশের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন তিনি।
সরকার সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর : গতকাল ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলটি।
এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সংবিধানে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এ দেশের প্রতিটি নাগরিকের ধর্মচর্চার স্বাধীনতা রয়েছে। সরকার ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আবহমানকাল থেকেই এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান। এ দেশে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করে। এ দেশের মানুষ একই সময়ে স্বাচ্ছন্দ্যে রোজা ও পূজা উদযাপন করেন। এখানে কখনোই মারাত্মক কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা ঘটেনি। সরকার প্রতিটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ধর্মচর্চা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করছে। এ দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক পৃথক ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট রয়েছে।