পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, শনাক্তকরণ ও তারা কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিলেন তা তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাই কোর্টের সাবেক অতিরিক্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিজু নাবিলা ইদ্রিস এবং মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন। এ কমিশন তদন্ত করে আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কমিশন গঠন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাক্ষতির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা তথা বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্ট গার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনো সংস্থার কোনো সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের পাঁচ সদস্য-বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। কমিশনের কার্যপরিধি উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত ২০১০ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা এবং কোন পরিস্থিতিতে ঘুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করবে। এ ছাড়াও জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনাসমূহের বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করাসহ এ বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করবে কমিশন। জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়-স্বজনকে অবহিত করবে। জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত তদন্তের তথ্যও সংগ্রহ করবে এ কমিশন এবং উপরি-বর্ণিত উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট যে কোনো কাজ করবে বলে জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে। কমিশনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যে কোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে বলেও জানানো হয়। এই কমিশনের সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক এবং কমিশনের সদস্য হাই কোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের মর্যাদা এবং অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।