স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয় ১১টি জেলা। এখন ধীরে ধীরে পানি নামতে শুরু করেছে। ভেসে উঠছে মৃত পশু-প্রাণী। ছড়িয়ে পড়ছে উৎকট গন্ধ। চিরচেনা বসতভিটাও এখন অচেনা বাসিন্দাদের কাছে। বন্যার্তরা বিভিন্ন রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে প্রশাসনের তরফে বন্যাকবলিত এলাকায় ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবার সব ধরনের সেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও জেলার অর্ধেক এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ নেই। ২০ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত বন্যায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১৭ জন। কুমিল্লায় ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভেসে গেছে প্রায় ১৯ কোটি টাকার মাছ। মৌলভীবাজারে পানি নামলেও বাড়ি ফিরতে পারছেন না অনেকে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা বন্যাদুর্গত ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২-তে দাঁড়িয়েছে বলে গতকাল জানিয়েছেন। গতকাল সচিবালয়ে বন্যা নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এসব কথা জানান। কে এম আলী রেজা জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৪ লাখ ৮০ হাজার ৪৬৩ জন। পানিবন্দি রয়েছে ১০ লাখ ৭২ হাজার ৫৭৯টি পরিবার। ৬৮টি উপজেলা বন্যা প্লাবিত হয়েছে যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন বা পৌরসভা ৪৯২টি। বন্যায় মারা যাওয়ার তথ্য উল্লেখ করে অতিরিক্ত সচিব বলেন, এ পর্যন্ত মৃত লোকসংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩৯, নারী ছয় ও শিশু সাত। কুমিল্লায় ১৪, ফেনীতে ১৭, চট্টগ্রামে ৬, খাগড়াছড়িতে ১, নোয়াখালীতে ৮, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১, কক্সবাজারে ৩ ও মৌলভীবাজার একজন মারা গেছেন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন একজন (মৌলভীবাজারে)। সিলেট জেলা থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। এক দিন আগেই বুধবার বন্যা নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানানো হয় ৩১ জন মারা যাওয়ার তথ্য। সে হিসাবে এক দিনের ব্যবধানে মৃত্যের সংখ্যা বেড়েছে ২১ জন। অতিরিক্ত সচিব বলেন, ১১ জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়ের জন্য ৩ হাজার ৪০৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে ৫ লাখ ২ হাজার ৫০১ লোক এবং ৩৬ হাজার ৪৪৮টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসার জন্য ৫৯৫টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সানজিদা ইয়াসমিন জানান, পানিতে ডুবে যাওয়া, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া এবং সাপের কামড়ে এরা মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে এ পর্যন্ত ৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ, ২০ হাজার ৬৫০ টন চাল, ১৫ হাজার পিস শুকনা খাবার বা অন্যান্য খাবার এবং শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কর্তৃক সংগৃহীত ১ লাখ ৪ হাজার ১০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, কাপড় ও পানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের (ডিডিএম) মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। ডিডিএম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। বন্যা আক্রান্ত জেলাসমূহের প্রশাসকদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, মেডিকেল টিম ও অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত সচিব। বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে মোবাইল ও টেলিফোন যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা আক্রান্ত জেলাসমূহে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করার জন্য ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকবৃন্দ সেবা প্রদান করছেন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এ ছাড়া বন্যা-পরবর্তী পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।
চট্টগ্রামে বাড়ছে চর্মরোগ, সংকট বিশুদ্ধ পানির : স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি-মিরসরাই উপজেলা। এখন ধীরে ধীরে পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে রোগবালাই। বাড়ছে চর্মরোগ। সংকট দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির। নেই পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। ভেসে উঠছে মৃত পশু-প্রাণী। ছড়িয়ে পড়ছে উৎকট গন্ধ। পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া নিজের বসতবাড়িও এখন অনেকের কাছে অচেনা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ-ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের। জানা যায়, চট্টগ্রামের ৯টি উপজেলায় বন্যার পানি ওঠে। এর মধ্যে ফটিকছড়ি ও মিরসরাই উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে যায়। ফটিকছড়িতে ২০০ ঘর সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন ও ৭ হাজার ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই অবস্থা মিরসরাই উপজেলার। তবে গত রবিবার থেকে আস্তে আস্তে পানি নামতে থাকে। পানি নামার পর দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষতগুলো। টানা কয়েকদিন ভেজা কাপড়ে থাকায় অনেকের মধ্যে ফানগাল, স্কেবিসসহ নানা ধরনের চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। গভীর নলকূপগুলো এখন অকেজো। স্বেচ্ছাসেবীদের মিনারেল ওয়াটার এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটই এখন বন্যার্ত মানুষের ভরসা। অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। দেখা দিচ্ছে পেটের পীড়া ও পানিবাহিত নানা রোগ। অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন জ¦র, শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশিতে। তাছাড়া মৃত প্রাণী ভেসে ওঠায় ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো চিকিৎসাসেবা শুরু করলেও তা প্রত্যন্ত গ্রামপর্যায়ে এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। কারণ সড়কগুলো ক্ষতবিক্ষত, চলে না যানবাহন। অনেক নিচু এলাকা এখনো জলমগ্ন। চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামের বন্যাকবলিত এলাকায় ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবার সব ধরনের সেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত আছে বিশেষ মেডিকেল টিম। দেওয়া হয়েছে ওরস্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ। আরও ওষুধ মজুত আছে।
ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে : ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে রয়েছে। এখনো ফেনী সদর, দাগনভূঞা, সোনাগাজী উপজেলার অনেক এলাকার মানুষ রয়েছে পানিবন্দি। শহরের পেট্রোবাংলা, মধুপুর, বিরিঞ্চি, সৈয়দনগর, মাস্টারপাড়া লমী হাজারী বাড়ি সড়ক পানিতে তলিয়ে আছে। অন্যান্য পাড়া থেকে পানি অনেকটা নেমে গেছে। সদর উপজেলার মোটবি, পাঁচগাছিয়া, ফাজিলরুর, ধর্মপুর ও ফরহাদ নগরের মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছে। দাগনভূঞার পূর্বচন্দ্রপুরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি দশা থেকে এখনো মুক্তি পায়নি। অন্যান্য উপজেলার নিম্নাঞ্চল এখনো পানির নিচে রয়েছে। জেলার অর্ধেক এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ নেই। এদিকে ফেনীতে ২০ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত বন্যায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১৭ জন। ফেনীর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
কুমিল্লায় ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা : বন্যায় কুমিল্লার ৮ উপজেলার কৃষিজমি, মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি। এসব খাতে ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, ২০ আগস্ট ভারতীয় ঢলের পানি ও অতিবৃষ্টিতে কুমিল্লায় আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এতে ডুবে যায় ঘরবাড়ি, গরুর খামার, মুরগির খামার, মাছের ঘের, পুকুর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাটসহ প্রায় সবকিছু। কুমিল্লার ১৪ উপজেলা প্লাবিত হলেও আট উপজেলা তথা বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট ও বরুড়া উপজেলার অবস্থা ভয়াবহ।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর কুমিল্লার কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, এখনো দুর্যোগ সময়। এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে ক্ষতি আমাদের ধারণার থেকে বেশিও হতে পারে। এখনই নিশ্চিতভাবে আমরা কোনো পরিসংখ্যান করিনি। দুর্যোগ সময় শেষ হলে আমরা পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে তা নিরূপণ করব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভেসে গেছে প্রায় ১৯ কোটি টাকার মাছ : জেলার চার উপজেলার ৮৬০টি পুকুরের অন্তত ৭৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আখাউড়া উপজেলার খামারিসহ মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে মৎস্য অধিদপ্তর। ২০ আগস্ট রাতে ভারতের পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী আখাউড়া উপজেলার হাওড়া নদীর বাঁধের তিনটি অংশে ভাঙন দেখা দেয়। এতে আখাউড়ার ৪০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। এ ছাড়া কসবা উপজেলারও তিনটি ইউনিয়নও প্লাবিত হয়।
মৌলভীবাজারে পানি নামলেও বাড়ি ফিরতে পারছেন না অনেকে : বন্যার পানিতে প্লাবিত হয় জেলার রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, কমলগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের ঘরবাড়ি, কৃষিজমিসহ অনেক কিছু। বন্যার পানি কমলেও অনেকেই বাড়ি ফিরতে পারছেন না। বিশেষ করে বন্যায় ক্ষতি হয়েছে বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরিকৃত কাঁচা ঘর। যাদের কাঁচা ঘর ছিল বন্যায় মাটিতে ধসে পড়েছে তাদের ঘরের বেড়া ও চালের টিন। ফলে পানি নামার পরও আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে পারছেন না ক্ষতিগ্রস্তরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নদীভাঙন : চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা ও মহানন্দা নদীতে পানি বাড়লেও কমেছে পুনর্ভবা নদীতে। তবে জেলায় বন্যার আশঙ্কা না থাকলেও সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়নে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
রাজশাহীতে পদ্মায় পানির উচ্চতা বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার : ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ফারাক্কা ব্যারাজের গেট খুলে দেওয়ার পর রাজশাহীতে ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার।
বুধবার সকাল ৯টায় রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৩০ মিটার। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৩৩ মিটার। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৬ দশমিক ৩২ মিটার। ৩ ঘণ্টা পর সকাল ৯টায় এ উচ্চতা দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৩৩ মিটারে।