জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। জাতীয় স্বার্থেই দলমতনির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতি ঐক্যবদ্ধ হলে পুরো বিশ্বই আমাদের সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করবে। গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে সিনিয়র ও জামায়াত বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের সব নাগরিকের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হলে গণমাধ্যমকর্মীসহ রাজনীতিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। উদ্দেশ্য হবে গণমানুষের মুক্তি ও কল্যাণ। নিকট অতীতে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের কলমকে রুদ্ধ করা হয়েছিল। সাময়িকভাবে হলেও সে তালা এখন খুলেছে। এ বিজয় ধরে রাখার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বীজতলা সুন্দর হলে তা মহিরুহে পরিণত হবে এবং একসময় ছায়া ও ফল দেবে। অর্জিত বিজয়কে পরিচর্যা করতে দলমতনির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, হিংসা-প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ নয়, বরং ক্ষমা ও সংশোধনের মিশন নিয়ে বিদ্যমান রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা প্রবর্তন করে গণমুখী নতুন ধারার রাজনীতির জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের কলম শানিত করতে হবে।
জামায়াত আমির আরও বলেন, আমরা প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। রাজনৈতিকভাবে আমাদের ওপর যারা জুলুম-নির্যাতন করেছে আমরা তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। তবে কোনো ভিকটিম বা ভিকটিমের পরিবার যদি আইনের আশ্রয় নেয়, তাহলে আমরা তাদেরও সহযোগিতা করব। দল হিসেবে আমরা কোনো প্রতিশোধ নেব না। আমরা আদর্শ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আর আদর্শ গণতন্ত্রের মূলমন্ত্রই হচ্ছে যার যার মতো স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার এবং ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতা।
ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মূসা ও প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল সমাজের সকল পর্যায়ে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা। তাদের স্লোগানই ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। আমাদের দেশে গণমাধ্যমকর্মীরাও জাস্টিস থেকে বঞ্চিত। তারা স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েজ বোর্ড দেয় না। ফলে তাদের পরিবার-পরিজন সন্তান-সন্ততি নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। এখন সময় এসেছে এসব বৈষম্যের অবসান ঘটানো।