ছাত্র-জনতার লংমার্চে রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় টার্গেট শুটার সেই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন। গত ৫ আগস্ট লংমার্চ কর্মসূচিতে গুলি চালানোর ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। এরপর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করে। গতকাল তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে এপিবিএন-১৩ (উত্তরা) কনস্টেবল পদমর্যাদার ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে শাহবাগ থানা পুলিশ। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে গ্রেপ্তার কনস্টেবল সুজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি।
ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মো. সারোয়ার জাহান জানান, সুজনকে শাহবাগ থানায় করা হত্যা মামলায় ৯ নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করে ডিবি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার লংমার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে চানখাঁরপুল এলাকায় গুলি চালানোর ভিডিও প্রচারের পর অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করে ডিবি পুলিশ এবং আমাদের কাছে হস্তান্তর করে।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার লংমার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে চানখাঁরপুল এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। সেদিন শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরও চানখাঁরপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায় পুলিশ, এতে মারা যান বেশ কয়েকজন। আহত হন অসংখ্য মানুষ। গুলি চালানোর একটি চাঞ্চল্যকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে তৎকালীন রমনা জোনের এডিসি আখতার হোসেনকে পাশে দাঁড়িয়ে থেকে নির্দেশ দিতে দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ওই এলাকার মানুষকে টার্গেট করে গুলি করছেন এপিবিএনের সদস্যরা। এর মধ্যে ক্লিয়ার একটি ফুটেজে এপিবিএন-১৩ সদস্য কনস্টেবল সুজনকে দেখা যায়। শাহবাগ থানায় দায়ের করা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাইনুল ইসলাম খান পুলক বলেন, ৫ আগস্টে গুলিতে হত্যার ঘটনায় মোহাম্মদ ইসমামুল হক নামে একজন নিহত হন। গত ২৫ আগস্ট তার বড় ভাই মোহাম্মদ মহিবুল হক বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আরও অনেককে অজ্ঞাত দেখিয়ে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় কনস্টেবল সুজন অভিযুক্ত। তাকে প্রথমে ডিবি পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছিল। পরে ডিবি পুলিশ শাহবাগ থানার ৯ নম্বর হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে থানায় হস্তান্তর করে। নিয়মানুযায়ী পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমতি ও নির্দেশনায় আজ (গতকাল) তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।