জামায়াতের মেইন সাবজেক্ট হচ্ছে মানবতা, গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা; তাই মানবতাকে টুকরা টুকরা না করে যে কোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ করতে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল সকালে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত রাজধানীর বৃহত্তর কাফরুল অঞ্চলের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য লস্কর মুহাম্মদ তাসলিম ও মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মো. শহিদুল্লাহ, শাহ আলম তুহিন, মজলিসে শুরা সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম, আবদুল মতিন প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মানুষকে আমরা মানুষের মর্যাদা দিতে চাই। দল-ধর্মের ব্যবধান না করে মানুষকে দেশের স্বার্থে এবং জনগণের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দেশ ও জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে দলমত নির্বিশেষে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য দরকার। বিভক্ত জাতি কখনো উন্নতি করতে পারে না। মূলত, বিভক্ত জাতির জন্য অপমান ও লাঞ্ছনা অনিবার্য। সে ধারাবাহিকতায় দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের ওপর অপমান ও লাঞ্ছনা চলেছে। যা আর চলতে দেওয়া যায় না বরং তা পাল্টানোর সময় এসে গেছে। এ জন্য আমাদের অতীত বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। মূলত যে জড়োসড়ো হয়ে চলে সে নিজের জন্য যেমন বোঝা; ঠিক তেমনিভাবে পরিবার ও সমাজের জন্যও বোঝা। আর যে ব্যক্তি নিজেকে মেলে ধরতে পারে সে নিজের জন্য যেমন অ্যাসেট; ঠিক তেমনিভাবে পরিবার, সমাজ ও জাতির জন্যও অ্যাসেট। তাই আমাদের প্রত্যেককেই অ্যাসেট হওয়ার শপথ গ্রহণ করতে হবে। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এখনো ফ্যাসিবাদের সহযোগীরা : এদিকে গতকাল বিকালে ঢাকা মহনগরী দক্ষিণ জামায়াতের আয়োজনে আইনজীবী সম্মেলনে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাষ্ট্রীয় কোনো দায়িত্বে থাকার অধিকার নেই। তিনি বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদের সহযোগীরা এখনো আছেন। তাদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে। যারা গণহত্যা চালিয়েছে, আদেশ পালন এবং সহযোগিতা করেছে সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া যাবে না। জামায়াত আমির বলেন, ফ্যাসিবাদ পতনের আন্দোলনের শহীদরা জাতীয় বীর। তাদের টাকা দিয়ে মাপা যাবে না। শহীদদের আমরা দলীয় সম্পদ বানাতে চাই না। শহীদরা সবার, জাতির। শহীদরা আমাদের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। শহীদদের প্রতিটি পরিবার থেকে একজন করে সরকারি চাকরি দিতে হবে, এটা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব।
অন্তর্বর্তী সরকারকে এ কাজ করতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কী কী সংস্কার করতে চায়, এর তালিকা দিতে হবে এবং এগুলো সংস্কারের টাইমলাইন দিতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারে ব্যর্থ হলে নির্বাচনের রোডম্যাপও ব্যর্থ হবে।
তিনি বলেন, সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করতে হবে। ভোটের আগে সংস্কার কাজগুলো সম্পন্ন হলেই কেবল নির্বাচনি রোডম্যাপ সফল হবে।