শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর প্রতি অব্যাহত সমর্থনের কথা বলেছেন নিউইয়র্ক-ইউএস সিনেটের মেজরিটি হুইপ ডিক ডারবিন। বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী নেতা হিসেবে এখন তিনি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের মুখোমুখি। ডিক ডারবিন নিউইয়র্ক সময় গতকাল সকালে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব কথা বলেন।
ডারবিন বলেন, ড. ইউনূসের সঙ্গে ২০ বছরের বেশি আগে বাংলাদেশ ভ্রমণের সময় তাঁর প্রথম দেখা হয়েছিল। ড. ইউনূসের ধারণা বিশ্বকে বদলে দিয়েছে এবং তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতে সাহায্য করেছে। তবে দুঃখজনকভাবে, তাঁর ধারণাগুলো তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্রোধও অর্জন করেছিল।
হাসিনা সরকার ড. ইউনূসকে বছরের পর বছর ধরে সন্দেহজনক আইনি অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেছিল। জেলের হুমকি দিয়েছিল, যোগ করেন ডারবিন।
বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিউইয়র্ক-ইউএস সিনেটের মেজরিটি হুইপ বলেন, যারা একটি উন্নত ভবিষ্যতে বিশ্বাস করে, তারা ড. ইউনূসকে তাদের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। আজ আমি আবারও ড. ইউনূসের প্রতি আমার অবিচ্ছিন্ন সমর্থনের প্রস্তাব দিয়েছি এবং রাষ্ট্রপতি বাইডেনকেও তাঁকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করছি। আমি জানি ড. ইউনূসের হৃদয়ে বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ রয়েছে এবং এ চ্যালেঞ্জিং সময়ে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।
জুলাইয়ে ডারবিন ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানির নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশে তিন সহকর্মীর নেতৃত্ব দেন, বাংলাদেশ সরকারকে ড. ইউনূসের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে এবং তাঁর মুখোমুখি হওয়া সন্দেহজনক অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানি বন্ধ করার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আহ্বান জানিয়ে ডারবিন এবং তাঁর সহকর্মীদের পাঠানো একটি চিঠির পর বিবৃতিটি দেওয়া হয়েছে। এ গ্রীষ্মের শুরুতে ডারবিন সিনেট ফ্লোরে একটি বক্তৃতায় ড. ইউনূসের প্রতি তাঁর সমর্থন প্রকাশ করেছিলেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক প্রচারণার নিন্দা করেছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ওবামাসহ ১০০-এর বেশি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। ডারবিন ২০১০ সালে ড. ইউনূসকে কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল প্রদানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেন, বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর অগ্রণী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ। পরে ২০১৩ সালে এ পদকটি ড. ইউনূসকে প্রদান করা হয়। ডারবিন ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন, তখন তিনি প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।