দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হয়েছে। বিষয়টি তদন্তে গঠন করা হয়েছে কমিটি। অপরদিকে সাবেক সরকারের সুবিধাভোগীরাও ভোল পাল্টে নিজেদের বঞ্চিত দাবি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাগিয়ে নিচ্ছেন পদোন্নতি। এসব বিষয় খতিয়ে দেখছে জনপ্রশাসন। প্রশাসনের সুনাম রক্ষায় কঠোর হতে চায় মন্ত্রণালয়। নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিবের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগে এক নারী উল্লেখ করেন- বর্তমান যুগ্ম সচিব যখন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে উপসচিব ছিলেন, তখন তিনি কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরির জন্য তার পূর্ব পরিচিত একজনের মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। একপর্যায়ে তার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। গত ১৩ জুন ধানসিঁড়ি রেস্টুরেন্টে ৫০ হাজার টাকা নগদ এবং সাড়ে ৬ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়। পরে মন্ত্রণালয়ের মনোগ্রামযুক্ত খামে কাগজপত্র আমার বাসার ঠিকানায় পাঠানো হয়। পরে জানতে পারি এটা ভুয়া নিয়োগ। বিষয়টি ওই কর্মকর্তাকে জানালে তিনি একজন কথিত সিনিয়র সহকারী সচিব টিপুর নম্বরে কথা বলতে বলেন। তাকে ফোন করলে ওই কর্মকর্তা আমাকে নিয়ে শেরাটন হোটেলে সময় কাটাতে চান। পরে ওই কর্মকর্তার পাঠানো গাড়িতে আমাকে তুলে নেওয়া হয়। আমি পুলিশের ৯৯৯-এর সহায়তা নিই। এ সময় ওই কর্মকর্তার ব্যক্তিগত অফিস সহায়ক রুবেলকে আটক করে পুলিশ। এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এরশাদ হোসেন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ওই ঘটনার এখনো তদন্ত চলছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব তদন্তে আমি জবাব দিয়ে যাচ্ছি।
অপর অভিযোগটি উঠেছে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে। প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে, শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পর সন্তান নষ্ট এবং স্ত্রীর মর্যাদা না দেওয়াসহ তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন এক নারী। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর জমা দেওয়া লিখিত আবেদনে অভিযুক্ত উপসচিবের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন। অভিযোগের সূত্র ধরে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান (বর্তমানে ওএসডি) পিএস হিসেবে কর্মরত বিসিএস ২৯ ব্যাচের কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব মিথ্যা। কোনো ভিত্তি নেই। তবে এই ঘটনা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। দুর্নীতি ও নারী নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করবে জাতীয় সংসদ সচিব ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ্র নেতৃত্বে গঠিত কমিটি।
এদিকে সদ্য উপসচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ২৯তম ব্যাচের কর্মকর্তা তারিক হাসানের বিরুদ্ধে চাকরি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, দুবাইভিত্তক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এম এইচ টিপু জেনারেলে ট্রেডিং এলএলসিতে প্রধান ইনভেস্টমেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে গত এপ্রিলে লিয়েনে যান এই কর্মকর্তা। কিন্তু পদোন্নতির পর আবার আগস্টে যোগদানও করেন। তবে চাকরি বিধি মতে, কেউ লিয়েনে থাকলে লিয়েন শেষ করার পর পদোন্নতিতে যোগ দেন। তিনি তা করেননি। এ ঘটনায় রীতিমতো বিম্ময় প্রকাশ করেছেন জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া তিনি গত সরকারের আমলে নানাভাবে সুবিধাভোগী হলেও বর্তমানে নিজেকে বঞ্চিত ছিলেন বলে দাবি করে পদোন্নতি বাগিয়ে নিয়েছেন।