অক্টোবর আসতেই প্রতি বছরের মতো আবারও বিষে ভরে উঠছে ঢাকার বাতাস। বৃষ্টির কারণে মাসের প্রথম ১১ দিন দূষণ কিছুটা কম থাকলেও গত দুই দিন ধরে বিশ্বের মধ্যে দূষণের শীর্ষ সারিতে থাকছে ঢাকার নাম।
বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা আইকিউ এয়ারের তথ্যানুযায়ী, শনিবার বিকাল ৫টা থেকে গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বাতাস চার ঘণ্টা ছিল সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য ক্ষতিকর, বাকি ২০ ঘণ্টা ছিল সব শ্রেণির মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর।
গতকাল বিকাল ৫টায় বায়ুদূষণে ঢাকা ছিল বিশ্বের ১০০টি বড় শহরের মধ্যে চতুর্থ। প্রথম তিনটি শহর ছিল যথাক্রমে চীনের বেইজিং, ইরাকের বাগদাদ ও পাকিস্তানের করাচি। এ সময় বায়ুমান সূচকে (একিউআই) ঢাকার স্কোর ছিল ১৫৮, যা সব শ্রেণির মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর। তবে ৫টা ৩৫ মিনিটে ১৬৪ স্কোর নিয়ে বায়ুদূষণে ঢাকা উঠে আসে দ্বিতীয় অবস্থানে। এ সময় ঢাকার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ক্ষতিকর অতি সুক্ষ বস্তুকনা (পিএম ২.৫) ছিল ৭৪ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত নিরাপদ সীমার চেয়ে ১৪.৮ গুণ বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্ষার সময় গাড়ির চাকায় রাস্তার ধুলো ওড়ে না। এ ছাড়া বৃষ্টির কারণে বাতাসের দূষিত পদার্থ মাটিতে পড়ে যায়। তাই বায়ু কিছুটা নির্মল থাকে। অক্টোবর থেকেই বৃষ্টি কমে যায়। বাতাসের আর্দ্রতা কমতে থাকে। তাই বায়ুদূষণও বাড়ে। ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত টানা দূষণ বাড়ে। সাধারণত, জানুয়ারিতে দূষণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। ধূলাদূষণ নিয়ন্ত্রণ না করে নির্মাণকাজ, সড়কগুলো পরিষ্কার না থাকা, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, উন্মুক্ত ট্রাকে নির্মাণসামগ্রী পরিবহন, ঢাকার চারপাশের ইটভাটা, পরিশোধন না করে কলকারখানার ধোঁয়া বাতাসে ছাড়া, যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা যা থেকে পরবর্তীতে ধুলা জন্ম নেয়। এগুলোই বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ। এগুলো নিয়ন্ত্রণে আইন থাকলেও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই।