শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

খুশকিমুক্ত ঝরঝরে চুল...

মনীষা আক্তার

খুশকিমুক্ত ঝরঝরে চুল...

সময়টাই এমন, বাতাসের হিম ছোঁয়ায় প্রকৃতির সঙ্গে চুলও হয়ে পড়ে প্রাণহীন নির্জীব। শুষ্ক আবহাওয়াতে ধুলাবালু আর মাথার উপর কড়া রোদে চুলের অন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি বেড়ে যায় খুশকিও। শীতের এ সময়টা ত্বকের পাশাপাশি চুলকেও করে তোলে রুক্ষ ও প্রাণহীন। সমস্যাটি অস্বস্তিকর হলেও ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যম এটি দূর করা সম্ভব। একটু সচেতনতা ও যত্ন আপনার চুলকে করে তুলবে খুশকিমুক্ত ও প্রাণবন্ত। জানাচ্ছেন- মনীষা আক্তার

 

শীত মৌসুমে চুল নিয়ে সমস্যার অন্ত নেই। বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়, অন্যদিকে বেড়ে যায় ধুলোবালুর প্রকোপ। শুরু হয়ে যায় চুলের রুক্ষতা, খুশকি, সঙ্গে চুল পড়া। আরেকটি সমস্যা হলো, চুল আঠালো হয়ে যাওয়া। নিমিষেই চুলকে করে তোলে অস্বস্তিকর। হারিয়ে যায় ঝরঝরা ভাব। যথাযথ যত্ন নিলে এখনো চুল থাকবে ঝরঝরে, সুন্দর। প্রতিদিন চুল পরিষ্কার করার কোনো বিকল্প নেই। তবে চুলেরও ধরন বুঝে যত্ন নিন।

মাথার তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন :

এ ধরনের ত্বকে খুশকি লুকায়িত থাকে। এ জন্য মৌরি ও সমপরিমাণ পানি সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন ভালোমতো বেটে মাথার ত্বকে ঘণ্টা দেড়েক লাগিয়ে রাখুন।  তারপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। মৌরি প্রাকৃতিক উপাদান। খুশকি দূরীকরণে উপকারী।

মাথার শুষ্ক ত্বকের যত্ন : মাথার ত্বক শুষ্ক হলে শীতের এই সময়ে বিড়ম্বনাটাও বেশি। গুঁড়া খুশকি বেড়ে যায়। এ জন্য দেড় টেবিল চামচ মেথি ও দেড় টেবিল চামচ শুকনা আমলকী এক কাপ পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন ভালো করে বেটে নিন। সঙ্গে ২-৩ চামচ মধু মেশান। মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় ব্যবহার করুন। খুশকি দূর হবে সঙ্গে চুলে পুষ্টি ফিরে পাবে।

চুলের রুক্ষতায় : এ সময়ে চুলে রুক্ষ ভাবলেসটা বেশি থাকে। রুক্ষ আবহাওয়ায় মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ১ কাপ গরম পানিতে ৫-৬টা রিঠা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন তা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি শ্যাম্পুর কাজ করে। এ ছাড়া রোজ শ্যাম্পু করার জন্য শ্যাম্পুর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিলে ভালো। বাসায় থাকাকালীন কেবল চুলে তেল ব্যবহার করবেন অন্যথায় চুলে বেশি ময়লা জমতে পারে। বাইরে বেরোনোর আগে ভালোমতো চুল বেঁধে নিন বা স্কার্ফ দিয়ে চুল ঢেকে রাখতে পারেন।

 

ঝলমলে চুলের জন্য : ১টি পাকা কলা, ৩টি দেশি পিয়াজ ও এক টেবিল চামচ মধু বেটে একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। বেন্ডটা যেন ভালো করে মিহি হয়। এরপর চুলের গোড়ায় ও সম্পূর্ণ চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শুকিয়ে এল ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন। এভাবে মিশ্রণটি কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার চুল ঝলমলে হওয়ার পাশাপাশি চুলের গোড়াও মজবুত হবে।

চুল পরিষ্কার রাখুন : এই সময়ে টু-ইন-ওয়ান শ্যাম্পু  ব্যবহার না করাই ভালো। এ ক্ষেত্রে আলাদা করে শ্যাম্পু করে তারপর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করার চেষ্টা করুন। খুশকি দেখা দিলে তেল দিয়ে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এ সময় বড় দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে খুশকি চুলের গোড়া থেকে উঠে আসবে। পরে ধুয়ে ফেললেই চলে যাবে।

চুলের যত্নেপ্যাক : চুলের নানা রকম প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। চুলের ধরন বুঝে বাড়িতে থাকা ফল পেস্ট করে ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে একদিন আমলকীর পেস্ট দিতে পারেন। এ ছাড়া টকদই ও লেবুর রসের সঙ্গে চাইলে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে চুল ঝরঝরে হবে।

চুলের যত্ন প্রতিদিন : শীত ঠাণ্ডার এই দিনে চুলের যত্ন একটু কষ্টসাধ্য হলেও প্রতিদিনই চুল ধুয়ে নিতে হবে। কেননা আপনি বাইরে থেকে যখন ফিরবেন রুক্ষ আবহাওয়ায় আপনার চুলও হয়ে উঠবে রুক্ষ। এ সময় বাইরে অনেক বেশি ধুলোবালু উড়ে বলে রোজ চুল পরিষ্কার করা উচিত। ঠাণ্ডা পানি দিয়েই চুল ধুয়ে ফেলুন।

ঘরোয়া সমাধান

০. আমলা প্যাকের সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে চুলে সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করুন।

০. টকদই, লেবুর রস ও পানি মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে চুলে লাগান। ১৫-২০ মিনিট পর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

০. নারিকেল তেল ও লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় দিয়ে ঘণ্টাখানেক পর শ্যাম্পু করে নিন।

০. চুলের রুক্ষতা দূর করার জন্য একটি ডিম ফেটিয়ে তাতে ৩ চামচ অলিভ অয়েল ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

০. পিয়াজের রস খুব দ্রুত খুশকি দূর করে। পিয়াজ মিহি করে বেটে নিয়ে রস ছেঁকে চুলের গোড়ায় দিয়ে দিন। ২০-২৫ মিনিট পর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর